মন্দিরে চুরির তালিকা ক্রমশই বাড়ছে কালনায়। বুধবার রাতে মন্তেশ্বরের দেনুড় গ্রামে শ্রী চৈতন্যের দীক্ষাগুরু কেশব ভারতীর পাঠবাড়িতে লোহার ও কাঠের দরজার তালা ভেঙে বিগ্রহের বেশ কিছু গয়না চুরি যায়। লুঠ হয় প্রণামীর টাকাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাচীন এই দেবস্থানে প্রতিদিনই বহু ভক্তেরা আসতেন। মন্দিরের ভেতর রাধা, কৃষ্ণ, জগন্নাথ ও কেশব ভারতীর মূর্তি এবং বেশ কিছু নারায়ণ শিলা রয়েছে। এ দিন সকালে মন্দিরের তালা খুলতে গিয়ে সেবাইতের নজরে আসে মন্দিরে ঢোকার মুখের লোহার দরজা ও ভেতরের কাঠের দরজার তালা ভাঙা। একটু দূরে পড়ে রয়েছে প্রণামীর বাক্স। দ্রুত বেরিয়ে খবরটা জানান তিনি। সকালেই ভিড় জমে যায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মন্তেশ্বর থানার পুলিশও। দুপুরেই মন্দিরের সেবাইত সুব্রত ব্রহ্মচারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, রাধার সোনার হার, দুল, কৃষ্ণের রুপোর বাঁশি-সহ কয়েক ভরি সোনার গয়না ও প্রায় ভরি দশেক রুপোর গয়না চুরি গিয়েছে। এছাড়া প্রণামীর বাক্সে থাকা কয়েক হাজার টাকাও নেই। তিনি বলেন, “ঘটনায় আমরা মর্মাহত। পুলিশকে সমস্তটা জানানো হয়েছে। পুলিশ দ্রুত কিনারা করার আশ্বাস দিয়েছে।” |
|
|
চুরির পরে তদন্তে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
|
|
গত ২২ ডিসেম্বরও মন্তেশ্বরের পুঁড়শুড়ি গ্রামের তিনটি মন্দিরে পরপর চুরি হয়। খোওয়া যায় দেবদেবীর গয়না। ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঘণ্টা চারেক পথ অবরোধ করেন। সম্প্রতি ওই ঘটনায় পুলিশ বাঁকুড়ার তিন যুবককে গ্রেফতারও করে। ধৃতদের কাছ থেকে বেশ কিছু জিনিস উদ্ধারও হয়। এ দিনের ঘটনার পরে দেনুড়ের তৃণমূল নেতা রমেন গণ জানান, দেনুড়ের এই পাঠবাড়ি, দীনেশ্বর মন্দির ভক্তদের কাছে পূণ্যভূমি। সাধারণ মানুষ এই ঘটনায় মর্মাহত।
শুধু মন্তেশ্বরই নয়, চুরি চলছে পূর্বস্থলীতেও। বর্ষবরণের রাতে পাটুলি পঞ্চায়েতের শিবনগর এলাকাতেও একটি শিবমন্দিরে চুরি হয়। মন্দিরের তরফে তপন দাস পূর্বস্থলী থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, একটি সোনার বেলপাতা, কিছু রুপোর বাসন-সহ লক্ষাধিক টাকার মালপত্র চুরি গিয়েছে। দিন সাতেক আগেই জামালপুরের বুড়োরাজ মন্দির থেকে রুপোর সাপ চুরি যায়। কোনও ঘটনাতেই কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “বিষয়টি আমাদেরও দুশ্চিন্তায় রেখেছে। ঘটনার গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে একটি দল নয়, একাধিক দল দেবালয়ের তালা ভেঙে চুরি চালাচ্ছে। চেষ্টা চলছে তাদের চিহ্নিত করার।” |