বাঁশি মুখে ম্যাচ খেলিয়ে ইতিহাসে নাম তুলে ফেলা রেফারি কণিকা বর্মনকে অশ্লীল ইঙ্গিত করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি।
এরপর চব্বিশ ঘণ্টাও কাটেনি। ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে জেমস মোগা বলে দিলেন, কণিকাকে কোনও খারাপ ইঙ্গিত-ই করেননি। যা করেছেন সেটা সতীর্থদের উদ্দেশ্য করে। ঠিক মতো বল পাস না করার জন্য।
ম্যাচের আগের দিন মোগা অনুশীলনেই আসেন না। এটাই রেওয়াজ করে ফেলেছিলেন দক্ষিণ সুদানের স্ট্রাইকার। মহমেডান ম্যাচের আগের দিন বুধবার কিন্তু অনেকের আগেই তিনি হাজির তাঁবুতে। অনুশীলনের শুরুতে কোচের সঙ্গে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ করেই নেমে পড়লেন মাঠে। অনুশীলনের পর জিমের বাইরে দাঁড়িয়ে মোগা বলছিলেন, “এটা ঠিক যে ওঁর অনেক সিদ্ধান্ত আমার পছন্দ হয়নি। কিন্তু তাতে আমি রেফারিকে কেন খারাপ ইঙ্গিত করতে যাব? আমি তো সুয়োকা-খাবরাদের ঠিক করে বল পাস করার কথা বলছিলাম। আমার ভঙ্গিটা অনেকে বুঝতে পারেনি বলেই সমস্যা হয়েছে।” এর সঙ্গেই যোগ করেন, “মেয়েদের আমি খুব সম্মান করি। শুনলাম ভারতে প্রথম আমাদের ম্যাচেই কোনও মহিলা রেফারি বাঁশি মুখে নেমেছিলেন। ওঁর জন্য শুভেচ্ছা রইল।” মোগা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে না চাইলেও মাঠে উপস্থিত অনেকেই অবশ্য মনে করছেন, মোগার অভব্য ইঙ্গিত স্পষ্ট ভাবে কণিকার দিকেই ছিল। রাগের মাথায় বোধহয় তিনি মনে রাখেননি ম্যাচটা খেলাচ্ছেন কোনও মেয়ে। পুরুষ রেফারি নয়।
মেয়ে রেফারির সঙ্গে বিতর্কে জড়ানোর আগে অবশ্য কোচের সঙ্গেও একাধিক বার ঝামেলায় জড়িয়েছেন মোগা।
নতুন বছরের প্রথম দিন অনুশীলনে মোগাকে অবশ্য বেশ ফুরফুরে মেজাজেই দেখাল। তবে প্র্যাকটিসের পর লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের সঙ্গে মাঠের মধ্যেই কথা বলতে দেখা যায় মোগাকে। মোগা একই কথা বলেছেন তাঁকেও। কোচ আর্মান্দো কোলাসোও বললেন, “একটা ভুল পাস করলেই যেভাবে গ্যালারি থেকে মোগাকে গালাগাল করা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়।” দিনের শেষে অবশ্য কোচ এবং কর্তাদের পাশে পেয়ে গিয়েছেন মোগা। দেবব্রতবাবুও বললেন, “ছেলেটা কিন্তু খুব ভাল।” রেফারি বা ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্টে অবশ্য যা থাকছে তাতে মোগার কোনও সমস্যা হবে না। দেখতে বলা হচ্ছে ভিডিও। কিন্তু খেলার তো কোনও রেকর্ডিংই নেই।
কিন্তু লাল-হলুদে আসার পর মাঝে মধ্যেই কেন দক্ষিণ সুদানের স্ট্রাইকারকে মেজাজ হারাতে দেখা যাচ্ছে? জড়িয়ে পড়ছেন নানা বিতর্কে? প্রশ্ন শুনে হঠাৎই গম্ভীর হয়ে যান মোগা। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলেন, “কেন আমাকে জড়িয়ে বারবার এ রকম রটনা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের কারও খারাপ সম্পর্ক নয়। আর কোচের কথা বলছেন? আর্মান্দোর সঙ্গে আামর দারুণ সম্পর্ক। বাইরে তো আমরা একসঙ্গে আড্ডা মারি। আমার অনেক কথাই কোচের সঙ্গে ভাগ করি। ম্যাচের সময় উত্তেজনায় অনেকেই নানা আচরণ করে বসে, মাঠের বাইরে যার কোনও রেশ থাকে না।”
মোগার পায়ে গোল নেই অনেক দিন। মেজাজটা তাই মাঝেমধ্যেই ঠিক রাখতে পারছেন না তিনি। আর্মান্দোর মতো অনেকেরই ধারণা গোল পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। |