|
|
|
|
হরিয়ানায় বিদ্যুৎ সস্তা, আপের চাপে মহারাষ্ট্রও
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ১ জানুয়ারি |
চাপের নাম আপ! আম আদমি পার্টির চাপে পড়ে আজ এক ধাক্কায় বিদ্যুৎ বিলে দু’শো টাকা ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিল হরিয়ানা সরকার। আর তাদের দেখাদেখি বিদ্যুৎ মাসুল কমানোর পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিল আর এক কংগ্রেস শাসিত রাজ্য মহারাষ্ট্রও।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কালই দিল্লিতে বিদ্যুতের দাম অর্ধেক করে দিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার। আপ সরকারের ওই বেনজির সিদ্ধান্তে ঘোর চাপে পড়ে গিয়েছে অন্য রাজ্য সরকারগুলিকেও। দিল্লি সরকার ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পরে ২৪ ঘণ্টাও পেরোল না! হরিয়ানার ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা সরকার আজ বিদ্যুৎ বিলে দু’শো টাকা ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করল। একই দাবি উঠেছে মহারাষ্ট্র থেকেও। আর সেই দাবি তুলেছেন মুম্বইয়ের কংগ্রেস সাংসদ সঞ্জয় নিরুপম। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছেন, দিল্লি ও মুম্বইয়ে বিদ্যুৎ বণ্টনের দায়িত্বে রয়েছে একই সংস্থা। দিল্লিতে দাম কমানো গেলে মহারাষ্ট্রে কেন তা হবে না। তাঁর কথায়, “দশ বছরে মুম্বইয়ে চার বার বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। খরচ বেড়েছে আম আদমির। যাঁরা মাসে ৫০০ ইউনিটের কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, অবিলম্বে তাঁদের বিদ্যুৎ মাসুলে ছাড় দেওয়া হোক।” নয়তো তিনি নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন।
সামনেই লোকসভা ভোট। দিল্লির পরই আপ-এর লক্ষ্য দেশের বাণিজ্য-রাজধানী জয় করা। সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই মুম্বইয়ে তাদের তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি-ও মহারাষ্ট্র থেকে বেশ কিছু সাংসদ পাওয়ার লক্ষ্যে কোমর বেঁধে নেমেছে। নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে বড়সড় সভাও করিয়েছে মুম্বইয়ে। এই সাঁড়াশি চাপের মুখে বেজায় চিন্তিত পৃথ্বীরাজের সরকার ও দল। আপ-এর আগ্রাসী জনমুখী নীতির সঙ্গে টক্কর না নিয়ে, রাজ্য সরকারকে তাদের পথে হাঁটারই পরামর্শ দিয়েছেন মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানিকরাও ঠাকরে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ আজ ঘনিষ্ঠ মহলে বিদ্যুতের দাম কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বলেছেন, বিষয়টি দেখার জন্য গত ১৯ নভেম্বর শিল্পমন্ত্রী নারায়ণ রানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়া হয়েছিল। খুব শিগগিরই তারা রিপোর্ট দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত, রাহুল গাঁধীর চাপে বিধানসভায় কাল আদর্শ-কাণ্ড নিয়ে রিপোর্ট পুনবিবেচনা করতে পারে সরকার। সে দিনই বিদ্যুৎ নিয়ে কোনও জনমুখী ঘোষণা করে দেওয়া যেতে পারে বিতর্কের মুখ সে দিকে ঘুরিয়ে দিতে।
আপ সরকার থাকবে কি না, কাল আস্থা ভোটেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। দিল্লিতে সরকার পড়ে যাওয়া সত্ত্বেও হরিয়ানা-মহারাষ্ট্রের মানুষ যদি সস্তায় বিদ্যুৎ পান তবে তা আপ-এরই জয় বলে মনে করছেন কেজরিওয়ালরা। আত্মবিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী তাই ঘোষণা করেছেন, “রাজনীতি কী ভাবে করতে হয়, এখন থেকে তা আমরাই বাকিদের শেখাব।” দিল্লির বিদ্যুৎসংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অডিট করার সিদ্ধান্তে আজ সরকারি ভাবে সিলমোহর দিয়েছে অরবিন্দ সরকার।
দিল্লিতে বিদ্যুৎ বণ্টনের দায়িত্বে রয়েছে ৩টি সংস্থা। তাদেরই অন্যতম টাটা পাওয়ার আজ দিল্লিতে বিদ্যুৎ মাসুল কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থার সিইও প্রবীণ সিংহ বলেছেন, “গ্রাহকরা এতে উপকৃত হবেন।” তাদের সংস্থার বিরুদ্ধে অডিট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। সিএজি এবং অন্যান্য সংস্থা আগেও আমাদের অডিট করেছে। নতুন অডিট হলে আমরা হিসেব পেশ করব।” |
পুরনো খবর: বিদ্যুৎ-মাসুল নিয়ে আশ্বাসে রয়ে যাচ্ছে আশঙ্কাও |
|
|
|
|
|