সকালের কুয়াশা উধাও। বছরের শেষ দিনটা বেশ ঝলমলেই কাটল জলপাইগুড়িতে। বড়দিন থেকেই কুয়াশায় মোড়া সকাল দেখে আসছে জলপাইগুড়ি। কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল দুপুরও। গত কয়েকদিনের পরে মঙ্গলবার-ই ছিল ব্যতিক্রম। বছরের শেষ দিন, দিনভরই রোদের দেখা মিলল জলপাইগুড়িতে। আক্ষরিক অর্থেই এ দিন ছিল খানিকটা ব্যতিক্রম। গত বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণের আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি। |
শহরের কাছে বজরাপাড়ায় সেতুর উপর বিস্ফোরণ শহরের তিস্তা উদ্যান, জুবিলি পার্ক, লাগোয়া তিস্তা পাড়ের পরিচিত ভিড় এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল। ভিড় কমেছিল সিনেমা হলেরও। চারদিন পরে কিছুটা হলেও, এ দিন শহরের চেনা ছবিটা দেখা গেল। এ দিন সপরিবারে জুবিলি পার্কে ঘুরতে এসেছিলেন ডুয়ার্সের একটি চা বাগানের কর্মী তাপস চক্রবর্তী এবং সরকারি কর্মী প্রদীপ দাস। সকলে মিলে নৌকায় ঘুরতে দেখা গেল তাঁদের। পাশের একটি নৌকায় ঘুরে কয়েকজন যুবতীকে গান গাইতেও শোনা গেল। তাপসবাবু এবং প্রদীপবাবু দু’জনেই বললেন, “বিস্ফোরণের পরে দু’দিন বেশ ভয়েই ছিলাম। কিন্তু কতদিন আর বাড়িতে বসে থাকব?” তিস্তা পাড়েই গোল হয়ে বসে ছুটির মেজাজে মহিলাদের আড্ডাও দেখা গেল। রেনুকা সরকার, দীপা নাথেরা বলেন, “অত ভয় পেলে চলে না। জীবনকে তো আর থামিয়ে রাখা যায় না। আজ সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।” |
তিস্তা উদ্যানে দুপুর বেলায় সপরিবারে বেড়াতে এসেছিলেন শহরের কদমতলার বসিন্দা মধুমিতা ভুঁইয়া, হেমলতা অগ্রবাল। তাঁদের ছেলেমেয়েরা উদ্যানে খেলায় ব্যস্ত। তিস্তা উদ্যানের রেঞ্জ অফিসার পরেশচন্দ্র বর্মন বলেন, “তিস্তা উদ্যানে টিকিট বিক্রির নিরিখে প্রতি বছর বড় দিনের পর প্রতিদিন গড়ে পাঁচশো টিকিট বিক্রি হয়। সেখানে গত শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত গড়ে দুশোরও বেশি টিকিট বিক্রি হয়নি। তবে এ দিন মঙ্গলবার ভিড় অনেক বেশি ছিল।” জলপাইগুড়ির একটি সিনেমা হলে চাঁদের পাহাড় দেখতেও এ দিন ভিড় অনেক বেশি ছিল। সিনেমা হলের ম্যানেজার মোতিলাল সারাওগি বলেন, “বিস্ফোরণের আতঙ্কের কারণে সাময়িকভাবে টিকিট বিক্রি কমেছিল। এখন আবার তা স্বাভাবিক হচ্ছে।” জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “সাময়িকভাবে শহরের বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছিলেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।”
|