চিপকের ‘ধানখেতে’ বাংলার ইট খেয়ে পাল্টা পাটকেল
দ্য অনুমোদন পাওয়া দেশের কোনও আনকোরা ক্রিকেট সংস্থা নয় তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থা। রঞ্জি ট্রফিতে যাদের টিম মুম্বইয়ের মতো একাধিপত্য না দেখালেও কুলীন সম্প্রদায়ভুক্ত। স্টেডিয়ামও রাতারাতি গজিয়ে ওঠা কোনও ক্রিকেট মাঠ নয়, চিপক। স্বয়ং বোর্ড প্রেসিডেন্ট নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ঘরের মাঠ!
কিন্তু সেখানেই যে দেশজ ক্রিকেটের এমন লজ্জাজনক প্রেক্ষাপট তৈরি হবে আন্দাজ পাওয়া যায়নি। চিপকের পিচে কি না এক দিনে পড়ল ১৬ উইকেট! যা দেশের অন্যতম সেরা টেস্ট কেন্দ্র। শুধু শ্রীনিবাসনের ডেরা কেন, বোর্ডের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিরঞ্জন শাহ-র কেন্দ্র রাজকোটে সৌরাষ্ট্র বনাম সার্ভিসেস ম্যাচে এ দিনই পড়ল ১৯ উইকেট!
যা দেখে প্রশ্ন উঠে পড়ছে, রঞ্জি নক আউটে ওঠার জন্য এমন পিচ করে লাভ কী ভারতীয় ক্রিকেটের? জাতীয় দলের বিদেশে কী অবস্থা হচ্ছে, সোমবারই ডারবানে স্পষ্ট। সেখানে রঞ্জি পর্যায়ে চিপকে এমন ধুলো ওড়ানো টার্নার বানিয়ে কী লাভ?
বোর্ডের পিচ কমিটি থেকে সোমবার কেউ কেউ বললেন, ছ’জন মিলে সব জায়গায় একইসঙ্গে উপস্থিত থাকা সম্ভব হচ্ছে না। আর এ ভাবে বোর্ডের প্রভাবশালী কর্তারা রাজ্য টিমের উইকেট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে, কিছু করারও থাকছে না। পিচ কমিটি থেকেই বলে দেওয়া হচ্ছেকিউরেটরের পিচ তৈরিতে আর নাকি কোনও ভূমিকাই থাকছে না। মুখ্য নাকি এখন কোচ, ক্যাপ্টেন, কর্তারা!


সৌরাশিস-ইরেশ: যাঁদের দিকে তাকিয়ে বাংলা।
বাংলা বনাম তামিলাড়ু ম্যাচেও যা হচ্ছে পুরোদমে। চিপকের ফাটলে ভর্তি, ধুলো ওড়ানো লাল মাটির উইকেট দেখে বাংলা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ চেন্নাইয়ের পিচ কিউরেটরকে নাকি বলতে গিয়েছিলেন, এটা কী হয়েছে? হাসি মুখে কিউরেটর নাকি পাল্টা বলে দিয়েছেন, কিছু করার নেই। যেমন বলা হয়েছে, তিনি তেমন করেছেন! যদিও বাংলা বনাম তামিলনাড়ু ম্যাচের প্রথম দিনের স্কোরকার্ড দেখলে, ডব্লিউ ভি রামনের টিমের যে খুব লাভ হয়েছে বলা যাবে না।
কারণবাংলা ইট খেয়ে পাটকেলটাও দিচ্ছে ঠিকমতো!
সোমবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলার প্রথম ইনিংস মাত্র ১৩০ রানে শেষ হয়ে যায়। একমাত্র শুভময় দাস (৩৬) এবং সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (৩৪ ন:আ:) ছাড়া তিরিশের ঘরে কেউ ঢুকতে পারেননি। লক্ষ্মীরতন প্রথম বলে স্টাম্পড। এবং তাঁর পরের পাঁচের একজনও দু’অঙ্কের রানে ঢুকতে পারেননি। কিন্তু দিনের শেষে তামিলনাড়ুও ৬৬-৬! বাবা অপরাজিত থেকে শুরু করে সুহ্ম্রমণ্যম বদ্রীনাথ, দীনেশ কার্তিকসবাই ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন। সৌরাশিস লাহিড়ী এবং ইরেশ সাক্সেনা দু’টো করে উইকেট পেয়েছেন। অর্ণব নন্দী এবং ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় একটা করে। যা পরিস্থিতি, তাতে এই ম্যাচ যারা সরাসরি জিতবে তাদের কোয়ার্টার ফাইনাল সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত উজ্জ্বল। কারণ রাজস্থানের বিরুদ্ধে জয়পুরে বিপাকে বরোদা (৭ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট)। প্রথম দিনের শেষে তারা ১৬৩-৬।
চেন্নাই থেকে ফোনে সৌরাশিস সন্ধেয় বলছিলেন, “কাল ওদের বাকি চারটে তাড়াতাড়ি না ফেললে অ্যাডভান্টেজ বলা যাবে না।” আর খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রামনের অর্ডারি ‘ধানখেতে’ শুধু বাংলাকে ফেলে দেওয়া নয়। মানসিক চাপে ফেলারও পুরোদস্তুর চেষ্টা চলছে। একে তো পিচে বল যখন তখন লাফাচ্ছে, মাঝে মাঝেই মারাত্মক টার্ন করে ব্যাটসম্যানকে ধাঁধায় ফেলে দিচ্ছে। তার উপর এ দিন লক্ষ্মীরতন শুক্ল টস জেতার পর বিপক্ষ অধিনায়ক লক্ষ্মীপতি বালাজি নাকি বলতে শুরু করেন, টস তাঁরা জিতেছেন! তামিলনাড়ু আগে ব্যাট করবে। পরে ম্যাচ রেফারিকে এসে বলতে হয় যে, টসটা বাংলা জিতেছে। আরও শোনা গেল, বিপক্ষের দু’তিনটে ন্যায্য এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্তও বাংলার অনুকূলে দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের কাউকে কাউকে বলতে শোনা গেল, চেন্নাইয়ে ম্যাচ তাই ওটা নাকি ধরেই রাখা ছিল!
বাংলা অধিনায়ক, তিনি কী বলছেন? লক্ষ্মী ফোনে শুধু বললেন, “অনেক কিছু বলার আছে। কিন্তু আগে ম্যাচ জিতি। তার পর।”

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলা ১৩০ (শুভময় ৩৬, সুদীপ ৩৪ ন:আ:, রঙ্গরাজন ৬-৩০)
তামিলনাড়ু ৬৬-৬ (কার্তিক ২৮, সৌরাশিস ২-২৭, ইরেশ ২-২১)

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.