এক মৃত সন্তান প্রসবকে ঘিরে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে তুলে বিএমওএইচকে মারধর করেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। রবিবার দুপুরে ১ টা নাগাদ মানিকচক ব্লক হাসপাতালে এই ঘটনাটি ঘটে। চিকিৎসায় গাফিলতি অভিযোগে এনে প্রসূতির স্বামী সন্তোষ মণ্ডল মানিকচক থানায় বিএমওএইচের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও তাঁকে মারধর করার অভিযোগে রোগীর পরিবারের নামে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “দুটি অভিযোগ পুলিশ খতিয়ে দেখার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল। তিনি বলেন, “মানিকচক ব্লক হাসপাতালে ৬ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এর পরেও অভিযোগ ওঠা ঠিক নয়। শিশু মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ উঠলেই সেই চিকিৎসককে মারধর করতে হবে এটা কেমন কথা? বিএমওএইচকে থানায় অভিযোগ জানাতে বলেছি।”
শনিবার রাত ১০ নাগাদ নাজিরপুর এলাকার বাসিন্দা অনিতা মণ্ডল প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে তার বাড়ির লোকেরা মানিকচক হাসপাতালে ভর্তি করে। অনিতাদেবীর স্বামীর অভিযোগ, রাত ১০টায় স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল ১০টা অবধি চিকিৎসকও যাননি। তাঁর অভিযোগ, “১১টা নাগাদ স্ত্রী মৃত বাচ্চা প্রসব করে। চিকিৎসকের জন্য আমার বাচ্চা মারা গিয়েছে। সময় মতো চিকিৎসক আমার স্ত্রীকে দেখলে আমার স্ত্রী মৃত বাচ্চা প্রসব করত না।”
এর পরে নাজিরপুর এলাকা থেকে রোগীর পরিবারের লোক হাসপাতালে ঢুকে বিএমওএইচকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। তাঁকে কিল চড়, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ বিএমওএইচকে উদ্ধার করে। বিএমওএইচ জয়দেব মজুমদার বলেন, “প্রসূতি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎককরা দু’বার দেখেছেন। আজ প্রসব হওয়ার সময় আমি নিজে লেবার রুমে ছিলাম। ওই প্রসূতি মৃত বাচ্চা প্রসব করেছেন। কেন মৃত বাচ্চা প্রসব করল এই বলে রোগীর পরিবারের লোকজন আমাকে বেধড়ক মারতে থাকেন। আমি তাদের বোঝাতে থাকি পেটের মধ্যে বাচ্চা আগেই মারা গিয়েছিল। ওরা আমার কথা শুনতে চাননি। আমাকে কিল, চড় ও ঘুষি মেরেছেন। আমার গলার চেন ছিনিয়ে নিয়েছেন। মানিকচক থানায় প্রসূতির পরিবারের নামে অভিযোগ করেছি।” |