মালদহের গনিখান চৌধুরী রেল ডিভিশন হাসপাতালের আইসিইউ বন্ধ দীর্ঘদিন ধরে। পড়ে রয়েছে এক্স-রে এবং ইউএসজি মেশিন। বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। হাসপাতালের এহেন দশায় মালদহ ডিভিশনে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত প্রায় ৫০ হাজারের বেশি রেল কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। পরিষেবা স্বাভাবিক করার আর্জি একাধিক বার জানানো হলেও কাজ হয়নি। ক্ষুব্ধ রেলের সংগঠনগুলি আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে। |
মালদহ রেল হাসপাতাল।—নিজস্ব চিত্র। |
খাতায়-কলমে ১০ জন চিকিত্সক মালদহের গনিখান চৌধুরী ডিভিশন রেল হাসপাতালে থাকলেও আছেন আট জন। এরা ইএনটি, অর্থোপেডিক-সহ নানা বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক। এক জনও সাধারণ চিকিত্সক নেই। রেল হাসপাতালে চিফ মেডিক্যাল অফিসার অবসর নেওয়ার পর পদটি শূন্য। রেল কর্মীদের অভিযোগ, ৯টায় আউটডোর খোলার কথা থাকলেও ১১টার আগে খোলে না। ১টায় বন্ধ। এক রেলকর্মী বলেছেন, “পেটে অসহ্য ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে যাই। চিকিত্সক ভাল করে দেখে বললেন, ‘মদ খাওয়াটা ছাড়তে হবে’। আমি জীবনে কখনও মদ খাইনি। তাই হকচকিয়ে বাইরের চিকিত্সকের কাছে দেখাই। তার পরে অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচার করে সুস্থ হয়েছি। এই তো রেল হাসপাতালের অবস্থা। এখানে জ্বর, মাথা ব্যথা, পেট খারাপের ওষুধই শুধু পাওয়া যায়।
ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আগে এই রেল হাসপাতাল দারুণ চলত। রেলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন রোগী আসতেন। এখন রেল হাসপাতালের বেশ কয়েক জন চিকিত্সক চেম্বারেই ব্যস্ত থাকেন। বাইরের রোগী দূরের কথা রেল কর্মীরাই চিকিত্সা পরিষেবা পান না।”
মালদহ ডিভিশনের ডিআরএম রবীন্দ্রর গুপ্তা বলেন, “মালদহ রেল ডিভিশন হাসপাতালে চিকিত্সক আসতে চান না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা জানানো হয়েছে। এক্স-রে, ইউএসজি মেশিন দ্রুত সারানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” হাসাপাতালের ভারপ্রাপ্ত সহকারি চিফ মেডিক্যাল অফিসার প্রভাত সিংহ বলেছেন, “চিকিত্সক না থাকার জন্য আইসিইউ চালু করতে পারছি না। মাঝে কিছু দিন কলকাতার বিআর সিংহ রেল হাসপাতাল থেকে সপ্তাহে এক দিন করে চিকিত্সক আসছিলেন। সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এক জন অঙ্গনওয়াড়ির চিকিত্সককে দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” |