|
|
|
|
কলকাতা লিগ দেখতে পাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল |
ডার্বির সময় ছুটি চেয়ে বসলেন কোচ কোলাসো
প্রীতম সাহা • কলকাতা
ইস্টবেঙ্গল-৩ (সুয়োকা-পেনাল্টি, লেন, ভাসুম)
আর্মি একাদশ ০ |
সেনাদের হারিয়ে ছুটির দরখাস্ত জমা দিলেন আর্মান্দো কোলাসো। কলকাতা লিগের ডার্বিতেও সম্ভবত লাল-হলুদের রিজার্ভ বেঞ্চে দেখতে পাওয়া যাবে না ইস্টবেঙ্গল কোচকে!
ময়দানের প্রথম গোয়ান কোচের কাছে বোধহয় ব্যাপারটা অবাকের নয়! কলকাতা লিগ সমাপ্তির তেরো দিন আগেই যে ট্রফি দেখতে শুরু করে দিয়েছেন কোলাসো। ফেড কাপ শুরুর আগে তাই গোয়ায় একটা ‘হারিকেন ট্যুর তো বান্তা হ্যায় না?’ ম্যাচের পরে ইস্টবেঙ্গল কোচ বলছিলেন, “নয় জানুয়ারি থেকে চার দিনের ছুটির আবেদন করেছি ক্লাবের কাছে। বাড়িতে একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান আছে। তার আগে অবশ্য কলকাতা লিগ জেতাটা নিশ্চিত করে যেতে চাই।”
কলকাতা লিগে মেহতাব-মোগাদের ‘অশ্বমেধের ঘোড়া’ যে গতিতে ছুটছে, তাতে ১১ জানুয়ারির ডার্বি পর্যন্ত বোধহয় বসে থাকার দরকার নেই। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে মোহনবাগান লড়াইয়ের আগেই স্থানীয় লিগের ফয়সালা হয়ে যাবে। পরিসংখ্যানেই সেটা স্পষ্ট। মোহনবাগান ৯ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট। বাকি দু’টো বড় ম্যাচ (মহমেডান, ইস্টবেঙ্গল)। ইস্টবেঙ্গল ৬ ম্যাচে ১৮। বাকি পাঁচ ম্যাচ (রেলওয়ে এফসি, মহমেডান, ইউনাইটেড স্পোর্টস, কালীঘাট মিলন সঙ্ঘ, মোহনবাগান)। ওডাফারা শেষ দুটো ম্যাচ জিতলেও ২৭ পয়েন্টের বেশি পৌঁছতে পারবেন না। সেখানে ডার্বির আগে চার ম্যাচ থেকে ১১ পয়েন্ট তুলতে পারলেই আর্মান্দোর ‘ছুটির রাস্তা’ পরিষ্কার হয়ে যাবে। যদিও এ দিন ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “আমরা লিগের শেষ ম্যাচ খেলার আগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেও নীতির প্রশ্নে কোচকে ছাড়তে পারি না। কোলাসোর ছুটি মঞ্জুর হবে কি না সোমবার ঠিক হবে।” |
মোগার কোলে গোলের নায়ক লেন। রবিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
কোচের ছুটির দরখাস্তে অনুমোদনের সিলমোহর পড়ে কি না, সেটা সময় বলবে। তবে রবিবারের যুবভারতীতে আর্মি একাদশকে ম্যাচের শুরু থেকেই যেন ‘ছুটি’তে পাঠিয়ে দিলেন হরমনজ্যোৎ-সুয়োকারা। বড়দিনের ছুটির পরে ফুটবলারদের ফিটনেস পরীক্ষার মঞ্চ হিসাবে সেনাদের বিরুদ্ধে ম্যাচকে বেছে নিয়েছিলেন কোলাসো। সেই পরীক্ষায় লেটার মার্কস নিয়ে পাশ করলেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। সুয়োকার পেনাল্টি কিকে ইস্টবেঙ্গলের গোল-যাত্রা শুরু। যদিও পেনাল্টিটা আদায় করার পিছনে সৌমিক, লেন এবং মোগার অবদান বেশি। মাত্র ছ’মিনিটের ব্যবধানে ফের মোগারই ক্রস থেকে ২-০ লেনের। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট সাতেক আগে ভাসুমের বাঁ পায়ের জোরালো শটে ৩-০। গোলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত যদি ম্যাচের সেরা লেন, মোগা এবং সুয়োকা একবার সামনে একা গোলকিপার পেয়েও সুযোগ নষ্ট না করতেন।
তাৎপর্যের হল, গোল না পাওয়ার যন্ত্রণা চেপে রাখতে না পেরে ম্যাচের মধ্যেই মোগার আগ্নেয়গিরির মতো ফেটে পড়া। চিত্রনাট্য এক) মোগার বদলি সুবোধের জার্সি নম্বর তখনও বোর্ডে দেখাননি চতুর্থ রেফারি। বিরক্ত মোগা তার আগেই রেফারির দিকে হাত নেড়ে বেরিয়ে এলেন মাঠ ছেড়ে। চিত্রনাট্য দুই) সাইডলাইনের ধারে পড়ে থাকা জলের বোতলে তাঁর সজোরে লাথি। চিত্রনাট্য তিন) রিজার্ভ বেঞ্চে তাঁর মুখ গোমড়া করে বসে থাকার ছবি তুলতে আসা চিত্রসাংবাদিকদের দিকে তেড়ে যাওয়া। চিত্রনাট্য চার) অস্বাভাবিক আচরণের জন্য ড্রেসিংরুমে অধিনায়ক-কোচের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা। ফালোপা-জমানায় এএফসি কাপেও একবার এ রকম মেজাজ হারিয়েছিলেন সুদানের স্ট্রাইকার। শোনা যাচ্ছে, ঠিক মতো বল না পাওয়ায় সতীর্থদের উপর বিরক্ত তিনি। আর্মান্দোর অবশ্য যুক্তি, “আজ ভাল খেলতে পারেনি বলে হতাশায় করে ফেলেছে।”
আর্মান্দোর চিন্তায় মোগা থাকুন বা না-থাকুন, কলকাতা লিগের সূচি অবশ্যই আছে। আগামী তেরো দিনে কলকাতা লিগের পাঁচটা ম্যাচ খেলে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে ফেড কাপের যুদ্ধে নামবে ইস্টবেঙ্গল। এ দিন আইএফএকে একহাত নিয়ে আর্মান্দোর মন্তব্য, “জঘন্য সূচি হয়েছে। বুঝলাম এএফসি কাপের জন্য বেশ কিছু ম্যাচ পিছতে হয়েছে আইএফএ-কে। কিন্তু এত গায়ে-গায়ে ম্যাচ খেললে ফেড কাপে তো ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়বে।”
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, অর্ণব, নওবা, সৌমিক, গুরবিন্দর, হরমনজ্যোৎ, মেহতাব (অ্যালভিটো), সুয়োকা, ভাসুম (বলজিৎ), লেন, মোগা (সুবোধ)। |
|
|
|
|
|