রেলশহরে বৈঠকে আপ, আমল দিচ্ছে না অন্য দল
কেউ ব্যবসায়ী, কেউ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র, আবার কেউ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। তবে তাঁদের এখন একটাই পরিচয় ‘আম আদমি’। নিজেদের সমস্যা নিজেদের মতো করে বুঝে নিতে রবিবার রেলশহরের গিরি ময়দান রেল স্টেশন সংলগ্ন আরকন্যা বিদ্যালয়ের মাঠে মাথায় সাদা টুপি পড়ে গোল হয়ে বৈঠকে বসেছিলেন ওঁরা প্রায় একশো জন। এ বারই প্রথম।
রবিবারের সভার আহ্বায়ক খড়্গপুর আইআইটির চত্বরের এক বেসরকারি ক্যান্টিনের প্রাক্তন কর্মী মহাবীর যাদব বৈঠক প্রসঙ্গে বলেন, “দিল্লির রামলীলা ময়দানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে ঐতিহাসিক লড়াই শুরু হয়েছিল তা আজ সফল। কারণ, ওই আন্দোলনের অন্যতম মুখ অরবিন্দ কেজরিওয়াল আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। আমরা ওই লড়াইটা আরও সম্প্রসারিত করতে চাই। তারই অংশ হিসাবে রেলশহরে আমাদের এই বৈঠক।” খড়্গপুর আইআইটির ১৯৮৯ সালের প্রাক্তনী মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্র অরবিন্দই তাঁদের প্রেরণা। আর সেই কারণেই আইআইটি তথা রেলশহর আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন আইআইটি-র মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া দিল্লির আশুতোষ অগ্রবাল।
খড়্গপুরের আরকন্যা স্কুলের মাঠে চলছে ‘আপ’ এর বৈঠক।—নিজস্ব চিত্র।
তাঁর কথায়, “আমরা অনেক আগে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলাম। আমরা আইআইটির ভিতরে আপ-এর সদস্য সংখ্যা বাড়চ্ছি। যেহেতু প্রতিষ্ঠানের ভিতরে কোনও বড় কর্মসূচি নিতে পারব না, তাই বাইরে আমরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছি।”
তা হলে কী আইআইটির পড়ুয়ারাই রয়েছেন এই সংগঠনের নেপথ্যে? মহাদেববাবু তা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ওরাই সংগঠনের থিঙ্কট্যাঙ্ক।” এ দিনের সভায় দেশের অন্যতম অগ্রণী ওই প্রতিষ্ঠানের দুই পড়ুয়াও উপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, আইআইটিতে শীতের ছুটি চলায় সংগঠনের অধিকাংশ সদস্যরা উপস্থিত থাকতে পারেননি। ফেসবুক, ই-মেল বা টেলিফোনে রবিবারের বৈঠকে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে জানান সভার আহ্বায়ক। তাঁর কথায়, “এক সময় আমি খড়্গপুরে একাই আম আদমি পার্টির (আপ) সদস্য ছিলাম। তখন চাকরি ছেড়ে সংগঠনে যোগ দিই। আজ সংখ্যাটা দুশোরও বেশি। আসলে এখন মানুষ এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারছেন।” কয়েক দিন ধরেই শহরের কিছু এলাকায় শিবির করে লোক জোগারে নেমেছেন তিনি।
খড়্গপুরের ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত শর্মা বলছিলেন, “এই শহরের মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এসেছেন। তাই এখানে দলের সমর্থক প্রাদেশিক দলগুলির তুলনায় অনেক বেশি হবে।” একই আশা নিয়ে আসা শহরের এলআইসি এজেন্ট অশোককুমার শর্মা, ব্যবসায়ী দিনু রায়, কলেজ ছাত্রী রেখা সিংহদের বক্তব্য: ওঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁরা পাশে আছেন।
রেলশহরে ‘আপ’-এর এই সংগঠন তৈরির খবরকে এখনই আমল দিতে নারাজ সিপিএম-তৃণমূল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “কেউ কোনও দলের সমর্থক হতেই পারেন। তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। মা-মাটি-মানুষের মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের জোয়ার নিয়ে ঝাড়গ্রাম আসছেন। তাই নিয়েই আমরা ব্যস্ত।” অন্য দিকে, জেলার সিপিএমের সম্পাদক দীপক সরকারের প্রতিক্রিয়া, “আমার রাজনৈতিক জীবনে অনেক দল এসেছে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে যে কেউ কোনও দল করতেই পারেন। তাতে আমরা তৃণমূলের মতো বাধা দিতে যাব না।” রেলশহরে আপ আগামী দিনে কেমন জনপ্রিয়তা পায় দেখার সেটাই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.