ব্লক অফিস করতে জমি দিয়েছিলেন গ্রামবাসীই। ২২ বছর পরে ওই জমিদাতাদের ‘স্বীকৃতি’ দিতে ফলক বসাল পঞ্চায়েত সমিতি। রবিবার মাড়গ্রামে ব্লক প্রশাসনিক অফিসে ওই ভবনকে ঘিরে ওই অনুষ্ঠান অবশ্য বিতর্ক থেকে দূরে রইল না। এক দিকে অভিযোগ, ফলকে বাদ পড়ল ৭ জমিদাতার নাম। অন্য দিকে, অফিস স্থানান্তরের এমন কর্মকাণ্ডের উদ্যোক্তা হিসেবে ফলকে যে নাম এসেছে, তাতে ‘আমরা-ওরা’র অভিযোগ তুলছেন কয়েক জন বাসিন্দা।
রামপুরহাট শহরের একটি ভাড়া বাড়িতে ওই অফিস চলত। এলাকার অফিসকে এলাকাতেই ফেরাতে নিঃশর্তে জমিদান করেছিলেন গ্রামেরই কয়েক জন। সরকারি অর্ডার বের হলেও এক সময় দানে পাওয়া জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় অফিস স্থানান্তরে দশ বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা কাজী মিন্নার দাবি, ২০০০ সালে জমিজট কাটাতে দলমত নির্বিশেষে গ্রামের বহু মানুষ এগিয়ে এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এ দিনের স্বাকৃতি ফলকে ওই ইতিহাসটাকেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, এত দিন পরে স্বীকৃতি পেয়ে খুশি হয়েছেন জমিদাতা ৭০ বছর বয়সী অনুকুলচন্দ্র মণ্ডল, ৮২ বছর বয়সী কমলকৃষ্ণ দাসরা। তবে, ফলকে নাম না থাকায় অনুষ্ঠানে গিয়েও ফিরে আসেন মাড়গ্রামেরই বাসিন্দা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অরুণকুমার পাঁজা। তাঁর ক্ষোভ, “গিয়ে দেখি, ফলকে আমার মতো অনেক জমিদাতারই নাম নেই।”
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দৌলতুন্নেসার দাবি, “জমিদাতাদের কাছ থেকে কাগজ চাওয়া হয়েছিল। যাঁরা দিতে পেরেছেন, তাঁদের নাম রাখা হয়েছে। কোনও ভুল হলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।” ওই পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, “অনেকের নাম বাদ দেওয়ায় আমি আমন্ত্রণ পেয়েও অনুষ্ঠানে যাইনি।” কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মাল বলেন, “সব বিতর্ক ভুলে যাওয়া উচিত। কারণ, যোগ্যরা এত দিন পরে প্রাপ্য সম্মান পেলেন।” যদিও সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য আমিনুল হক বলছেন, “সব দলের মানুষ মিলে আন্দোলন করে জমিজট কাটিয়ে ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এমন মহান কাজের স্বীকৃতি ফলকে এক শ্রেণির মানুষ রাজনীতির রং লাগালেন।”
তবে, আগে ক্ষমতায় থেকেও সিপিএম কেন জমিদাতাদের স্বীকৃতি দেয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ব্যর্থতার কথা মেনে নিয়ে প্রাক্তন সভাপতি কেনিজ রবিউল ফতেমা বলছেন, “আসলে উদ্বোধন হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছিল। তাই কিছু করা যায়নি।” |