ক্রেডাইয়ের সঙ্গে বৈঠক অমিতের
শহরে জমির ঊর্ধ্বসীমা হটাতে আবার সওয়াল
তুন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই শহরাঞ্চলে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাল রাজ্যের নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই। সেই সঙ্গে, সল্টলেকের তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্রের (পাঁচ নম্বর সেক্টর) অব্যবহৃত প্রায় ২০ লক্ষ বর্গফুট এলাকা যাতে সব ধরনের সংস্থাকেই বিক্রি করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানাল তারা।
প্রথম দাবিটি নিয়ে সংগঠনের কাছে ‘নোট’ চেয়েছেন অমিতবাবু। দ্বিতীয় দাবিটি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবার নবান্নে এই দীর্ঘ বৈঠকের পর দু’পক্ষই খুশি।
এ রাজ্যের শহরাঞ্চলে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন চালু থাকায় কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি সাড়ে সাত কাঠার বেশি জমি নিজের দখলে রাখতে পারে না। একমাত্র সরকারের বিশেষ অনুমতি পেলে তবেই বাড়তি জমি রাখার অনুমতি মেলে। শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই এই আইন তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে আসছেন। এমন আইন তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী কেন্দ্রীয় সরকারও। বস্তুত, দেশের প্রায় কোনও রাজ্যেই শহরাঞ্চলে জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন নেই। এমনকী, জওহরলাল নেহরু জাতীয় নগর পুনর্নবীকরণ প্রকল্পের (জেএনএনইউআরএম) অধীনে বেশ কিছু কেন্দ্রীয় অনুদান পাওয়ার জন্য এই আইন তুলে দেওয়ার শর্ত রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর বেশ কয়েক কোটি টাকা কেন্দ্রীয় অনুদান উপেক্ষা করেই এই আইন বলবৎ রেখেছে রাজ্য সরকার। যার পিছনে রাজনীতিই বড় কারণ বলে শিল্পমহলের ধারণা। বাম আমলেও যখন ঊর্ধ্বসীমা আইন তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছিল, তখন সরকারের তরফে পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে গোটা শহরটাই বড়লোকেদের হাতে চলে যাবে।
ক্রেডাই সূত্রে বলা হচ্ছে, ঊর্ধ্বসীমা আইন থাকার ফলে বড় তো বটেই, মাঝারি মাপের আবাসন প্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই কারণেই নতুন শিল্পমন্ত্রীর কাছে ওই আইন তুলে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। যত দিন না আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তত দিন যাতে দ্রুত ঊর্ধ্বসীমায় ছাড়পত্র মেলে, তার ব্যবস্থা করার দাবিও জানিয়েছে ক্রেডাই।
এ দিনের বৈঠকে অমিতবাবু ছাড়াও পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম উপস্থিত ছিলেন। ক্রেডাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, হর্ষ পাতোদিয়া, সুশীল মোহতা এবং সন্তোষ রুংতা। বৈঠকের পরে হর্ষ নেওটিয়া বলেন, “খুবই সদর্থক আলোচনা হয়েছে। এ রাজ্যে নির্মাণ, পরিকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পের নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে। মন্ত্রীরা আমাদের সমস্যা মন দিয়ে শুনেছেন। আশা করব, সমস্যাগুলি দ্রুত কেটে যাবে।”
আর অমিতবাবুর বক্তব্য, “নির্মাণ ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত ন’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা খোলা মনে আলোচনা করেছি। জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে নির্মাণ সংস্থার দাবিদাওয়া বিচার করা হবে।”
সরকারি সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সল্টলেকের তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্র এলাকায় ২০ লক্ষ বগর্ফুট অব্যবহৃত এলাকা নিয়েও দীর্ঘ কথাবার্তা হয়। পাঁচ নম্বর সেক্টরের এই জায়গাটি মূলত তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পের জন্যই চিহ্নিত। ক্রেডাইয়ের দাবি, বহু দিন ধরেই এখানে অনেকটা জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কোনও তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা নির্মাণের আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কারণ, তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পে এখন মন্দা চলছে। কবে সেই অবস্থার পরিবর্তন হবে, কেউ জানে না। ক্রেডাইয়ের দাবি, এই অবস্থায় ওই জমি অন্য কোনও সংস্থাকে বিক্রি করে দেওয়া হোক। এ জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি দিক রাজ্য সরকার।
ক্রেডাইয়ের এই দাবি নিয়ে এ দিন সরকার কোনও চূড়ান্ত মতামত না-দিলেও বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। স্ট্যাম্প ডিউটি-র হার কমানো ছাড়াও জমি-বাড়ির মিউটেশন-কনভার্সন প্রক্রিয়ায় আরও দ্রুত ছাড়পত্র চেয়েছে ক্রেডাই।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.