চাকরির নামে প্রতারণার নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মানবাজার |
বেসরকারি স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েকশো তরুণ-তরুণীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার মানবাজার থানায় এই মর্মে স্থানীয় বাগডেগা গ্রামের বাসিন্দা কান্তিরাম দাসের বিরুদ্ধে ওই তরুণ-তরুণীদের কয়েকজন প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁরা ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে আসেন। তবে পুলিশ তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। ডিএসপি (ডিইবি) মহম্মদ শেখ আজিম বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওই তরুণ-তরুণীদের অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এলাকায় কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল তৈরি করতে চলেছে বলে এলাকায় প্রচার করা হয়। ওই স্কুলে শিক্ষকদের মাসে ৬০০০ টাকা করে বেতন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। স্কুল নির্মাণের প্রাথমিক খরচ তুলতে ভাবী শিক্ষকদের কাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। মানবাজার থানার রাধামাধবপুর গ্রামের জাকিরুদ্দিন আনসারি, ডাহা গ্রামের বিদ্যুৎ রায় মাহাতো, ঊষা সহিসদের অভিযোগ, ২০১০ সালে এলাকায় এমনই প্রচার চালানো হয়। চাকরির আশায় তাঁরা এলাকায় ওই সংস্থায় যুক্ত বলে পরিচিত কান্তিরাম দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, “চাকরি আশায় আমরা কান্তিরামবাবুকে ১৫ হাজার টাকা করে দিই। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন খুব শীঘ্রই এলাকায় স্কুল গড়ার কাজ শুরু হবে। কিন্তু এই তিন বছরে কোনও কিছুই হয়নি।’’
ভালুবাসা গ্রামের সমীর রায় মাহাতো অভিযোগ করেন, “প্রথমে জানতাম, কয়েকটি মাত্র স্কুল হবে। পরে জানা যায়, মানবাজার থানা এলাকায় ৬৫টি স্কুল তৈরির কথা জানিয়েছে ওই সংস্থা। সে ভাবেই গ্রামে গ্রামে ওরা টাকা আদায় করেছে। একে একে নানা গ্রাম থেকে এই খবর আসতেই আমরা বুঝতে পারি এই এলাকায় এতগুলো স্কুল করা সম্ভব নয়। তখনই আমরা বুঝতে পারি প্রতারিত হয়েছি।”
অভিযোগকারীদের দাবি, তাঁরা অনেকেই ইতিমধ্যে কান্তিবাবুর কথামতো নিজেদের এলাকায় গাছতলায়, লোকের বাড়ির বারান্দায় পড়ুয়াদের নিয়ে পঠনপাঠন শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু স্কুল নির্মাণ না হওয়ায় হয়নি। তাঁরা কান্তিবাবুর কাছে টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে তিনি আশ্বাস দিলেও টাকা দেননি বলে ওই তরুণদের দাবি। তাই বাধ্য হয়ে এ দিন কান্তিবাবুকে নিয়ে তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
বোরো থানার আঁকরো উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী কান্তিবাবুর দাবি, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি বেসরকারি সংস্থার নির্দেশমতো ওই সময় স্কুল গড়ার জন্য টাকা আদায় করা হয়েছিল। সেই টাকা সংস্থার তহবিলে জমা পড়েছে। আমি টাকা নিইনি। আমাকে মিথ্যা দোষারোপ করা হচ্ছে।” তবে ওই সংস্থা সম্পর্কে বিশদে জানাতে চাননি তিনি। এ দিকে পুলিশ তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়ায় অভিযোগকারীদের অনেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। |