|
|
|
|
রেল দুর্ঘটনার মহড়ায় উত্তেজনা
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
শুক্রবার। ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টো। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখার নিমপুরার কাছে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনা। রেলের আধিকারিকরা ছোটাছুটি করছেন। সাইরেন বাজিয়ে এল অ্যাম্বুল্যান্স। তবে চিন্তার কিছু নেই। সত্যিকারের কেউ জখম হননি। পুরোটাই রেলের সাজানো। শুক্রবার খড়্গপুরের নিমপুরার ক্লাসিফিকেশন ইয়ার্ডে রেল ও ন্যাশনাল ডিসাস্টার রেসপন্স ফোর্স-এর (এনডিআরএফ) যৌথ উদ্যোগে এভাবেই রেল দুর্ঘটনার মহড়া হল। যা দেখে এলাকার উত্সুক মানুষজন ভিড় জমাতে শুরু করেন। এমনকী জেলা প্রশাসনেও শোরগোল পড়ে যায়।
এমন ভাবে এই নকল রেল দুর্ঘটনা সাজানো হয়েছিল, যে বোঝার উপায় ছিল না। রেল ইয়ার্ডেই পড়ে থাকা দু’টি রেলের বগি নিয়ে রেললাইনের উপরে উল্টে দেওয়া হয়। তাতেই মজুত ছিল রক্তাক্ত প্রায় ২০টি ডামি মডেল। বসানো হয়েছিল সার্চ লাইট। এনডিআরএফ-এর কর্মীরা গ্যাস কাটার দিয়ে ওই দু’টি বগি কেটে একের পর এক ডামি বার করে আনছিলেন। |
সত্যি নয়, পড়ে থাকা রেলের বগি সাজিয়ে দুর্ঘটনার মহড়া। খড়্গপুরের নিমপুরায় নিজস্ব চিত্র। |
তাবু টাঙিয়ে খোলা হয়েছিল ক্যাম্প। সেখানেই পৃথক ভাবে মৃত ও জখম দেহগুলি স্তূপাকারে রাখা হচ্ছিল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, রেলের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, চিফ সেফটি অফিসার এন কাশীনাথ, সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ইন্সপেক্টর বিবেক কুমার। কন্ট্রোল রুম সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন এডিআরএম প্রকাশকুমার মণ্ডল। ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এনডিআরএফ-এর সঙ্গে মিলে এই ধরনের মহড়া এই প্রথম। রেল দুর্ঘটনা ঘটলে কী ভাবে সামলাতে হবে, তা-ই এখানে পরীক্ষামূলক ভাবে করা হচ্ছে।”
এ দিকে পুরো ব্যাপারটা এতটাই বিশ্বাসযোগ্য ভাবে হচ্ছিল যে, দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে বেশিক্ষণ লাগেনি। এ দিন জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা ভবনে চলছিল জরুরি বৈঠক। সেখানে খবর পৌঁছলে নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়ে যায় বৈঠক। জেলা মুূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও এসডিও-র ফোন যায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। হাসপাতালের চিকিত্সকদের খবর দিয়ে ডেকে পাঠানো হয় জরুরি বিভাগে। পরে হাসপাতাল সুপার দেবাশিস পাল বলেন, “ফোন পেয়ে এত কাণ্ড করার পরে জানতে পারি গোটাটাই নাটক। আমার মনে হয় এটা রেলের আগে থেকে জানানো উচিত ছিল। নচেত্ পরবর্তীকালে সত্যি ঘটনাও বিশ্বাস করা মুশকিল হবে।”
আসল দুর্ঘটনা ভেবে মহড়াস্থলে ভিড় জমেছিল ভালই। কিছুক্ষণ দেখার পর সত্যিটা জানতে পেরে রেল কলোনির এক অবাঙালি মহিলা বলছিলেন, “আসল দুর্ঘটনা ঘটলে এত তাড়াতাড়ি আদৌ কাজ হবে তো?”
|
|
|
|
|
|