রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আহত হলেন এক পরিবারে ছয় জন। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া ময়দান এলাকায়। আহতদের প্রত্যেকেই হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। এঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানায়, হাওড়া ময়দানের সদর বক্সি লেনের একটি চার তলা আবাসনের এক তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন বিশ্বনাথ দাস। তিনি খাবারের হোম ডেলিভারির ব্যবসা করেন। রোজের মতো এ দিনও দুপুরে তাঁর বাড়িতে বড় ওভেনে রান্না হচ্ছিল। বিকেলে আচমকা গ্যাস লিক করে গোটা রান্নাঘরে আগুন লাগে। তাতেই সিলিন্ডারটি ফেটে গেলে ঝলসে যান বিশ্বনাথবাবু, তাঁর স্ত্রী পারুল দাস, এক আত্মীয় বাসন্তী দাস। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের ঘরে। সেখানে বিশ্বনাথবাবুর মা পারুল দাস, ছেলে বিশ্বায়ন ও মেয়ে বিদিশাও ঝলসে যান। |
পুড়ে যাওয়া সেই রান্নাঘর। শুক্রবার, হাওড়া ময়দান এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় সূত্রের খবর, আচমকাই ওই বাড়ির রান্নাঘরের জানালা দিয়ে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। চিৎকারও শোনা যায়। এর পরেই ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেননি। খবর পেয়েই আসে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। ঘরের পিছনের দিকের জানালা ভেঙে ওই ছ’জনকে উদ্ধার করা হয়। প্রায় ৪৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নেভান দমকলকর্মীরা। আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান স্থানীয়েরাও।
পুলিশ জানায়, স্থানীয়েরা ওই পরিবারের ছ’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রত্যেককেই ভর্তি করা হয়েছে। তবে পারুল দাস ও বিদিশা দাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই দু’জনের শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি অংশ পুড়ে গিয়েছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে রান্নাঘরটি পুরো পুড়ে গিয়েছে। সারা ঘরে কালো জল ভর্তি। ওভেনের উপর তখনও বসানো রয়েছে ভাতের হাঁড়ি। পাশে উল্টে পড়ে রয়েছে পুড়ে কালো হওয়া জলের পাত্র, বাসনপত্র। মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রেসারকুকার, হাতা, খুন্তি, গামলা। সবই পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছে। ঘরের মেঝেতে ডাঁই করা পোড়া আলু। রান্না ঘর লাগোয়া ঘরটিরও কিছু অংশ পুড়ে গিয়েছে। আহত ছ’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে স্থানীয়েরাই ঘর থেকে পোড়া জামা-কাপড় বাইরে বার করে আনেন।
এ দিন দুপুরে হাসপাতালে বাসন্তীদেবী বলেন, “আমরা রান্না করছিলাম। আচমকাই গ্যাস সিলিন্ডারের কাছে দপ করে আগুন জ্বলে উঠল। কিছু বোঝার আগেই সারা ঘরে আগুন লেগে গেল। বাইরেও বেরোতে পারলাম না।” শিবপুর দমকল কেন্দ্রের স্টেশন অফিসার অসিতবরণ মান্না বলেন, “খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে। না হলে আগুন আরও ছড়িয়ে যেত।” |