একদিকে চলছিল বছরের পর বছর ধরে হুকিং। অন্য দিকে, বিদ্যুতের সংযোগের আবেদন করার পরে বছর ঘুরে গেলেও তা না পাওয়ার অভিযোগও ছিল সমান তালে। এই সমস্ত অভিযোগেরই প্রশমন করতে গ্রামে গ্রামে শিবির করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
সংস্থার আরামবাগ ডিভিশনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের গোঘাট-কামারপুকুর শাখার আনুড় গ্রামে ২৬০টি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন গোঘাট ২ বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত, পর্ষদের কামারপুকুর শাখার স্টেশন ম্যানেজার সজীব মণ্ডল, গোঘাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের তপন মণ্ডল প্রমুখ।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগ শাখার ম্যানেজার চন্দ্রশেখর সেনগুপ্ত বলেন, “বিভিন্ন গ্রামে শিবির করে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। সংযোগ বাবদ বিপিএলদের জন্য ধার্য করা হয়েছে ৫ টাকা এবং এপিএলদের জন্য ৪৫০ টাকা। এই ডিভিশনের সমস্ত গ্রামেই যাতে এই পরিষেবা দেওয়া যায়, সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় শক্তিশালী ট্রান্সফর্মার বসানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।”
বিদ্যুৎ সংযোগের জন্যে বিভিন্ন গ্রামে শিবির করে আশাতীত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিডিও। তিনি বলেন, “আনুড় গ্রামে ২৬০ জনকে সংযোগ দেওয়ার সময়েই আরও ১৩৫ জন গ্রাহক হতে চেয়ে আবেদন করেছেন। এলাকায় গিয়ে শিবির করার এই সুফল বিভিন্ন ক্ষেত্রেই যে পাওয়া যেতে পারে তার সবচেয়ে ভাল দৃষ্টান্ত এই শিবির।”
তপনবাবুর কথায়, “অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের গ্রাহক হওয়ার জন্য মানুষকে উৎসাহী করতে হয়েছে। সহজে চুরি করে বিদ্যুৎ পাওয়ার রেওয়াজ থেকে বেরোতে চাইছিলেন না অনেকে। তাঁদের বুঝিয়ে রাজি করানো গিয়েছে।” স্টেশন ম্যানেজার সজীববাবু জানান, “মানুষকে বোঝানো হয়েছে, দু’বছর বিদ্যুৎ চুরি করে যা সাশ্রয় হবে, একবার ধরা পড়লে তার চার গুণ বেশি জরিমানা দিতে হবে। জেলও খাটতে হবে।
বাড়িতে বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে খুশি আনুড় গ্রামের মনোয়ারা বেগম, শেখ লাল্টু, নিরাপদ রায়েরা। বিপিএল তালিকাভুক্ত বিমল মণ্ডল বলেন, “মাত্র ৫ টাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে ভাবতেই পারিনি। সারা মাসে মিটারে যাই বিল উঠুক, ঠিক টাকা মেটাতে পারব। এ বার থেকে বুঝেশুনে বিদ্যুৎ খরচ করব।” বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, এর আগে শিবির এমন শিবির হয়েছে গোঘাটেরই কুলিয়া গ্রামে। কিছু দিনের মধ্যেই গোঘাটে রামানন্দপুর গ্রামেও শিবির হবে। এই উদ্যোগকে গ্রামের দরিদ্র মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন। |