জলসঙ্কটে জেরবার হাওড়া পুর-এলাকার হাল ফেরাতে ‘গাঁধীগিরি’র পথে হাঁটলেন খোদ মেয়রই। শুক্রবার জলপ্রকল্পের অফিসে অব্যবস্থা দেখে সমস্যা না মেটা পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন বলে সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি। প্রায় চার ঘণ্টা পরে ইঞ্জিনিয়ারদের লিখিত প্রতিশ্রুতি আদায় করে তবেই ওই দফতর থেকে বেরোন মেয়র।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, ২২ থেকে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেশির ভাগ এলাকাতেই বর্তমানে জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কোথাও জলের গতি খুব ধীরে। আবার কোনও এলাকায় কলে জলই আসছে না। এই নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা মেয়রের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। এর প্রেক্ষিতেই এ দিন আচমকা পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প পরিদর্শনে যান মেয়র রথীন চক্রবর্তী। সেখানে ঘুরতে ঘুরতেই অব্যবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ মেয়র সোজা চলে যান প্রকল্পের অফিসে। সমস্যা মেটার আশ্বাস পেয়ে তবেই বেরোন তিনি।
এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ পদ্মপুকুর প্রকল্পে যান মেয়র। সঙ্গে ছিলেন পুর-কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের অরুণ রায়চৌধুরী-সহ আরও বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর। মেয়র বলেন, “ওখানে গিয়েই খোঁজ নিই জলসঙ্কট কেন হচ্ছে। প্রথমে কেউ তার উত্তর দিতে পারেনি। প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সুপার (ইঞ্জিনিয়ার) আশিষ সেনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে জানতে পারি তিনি ছুটিতে আছেন। অথচ কমিশনারের কাছে কোনও খবরই নেই।” এতেই বেজায় চটে যান মেয়র। বলেন, “কমিশনারকে না জানিয়ে এ ভাবে ছুটিতে যাওয়া নিয়মবিরুদ্ধ।”
কী সমস্যা রয়েছে প্রকল্পে?
মেয়র জানান, তিনটি পাম্পের মধ্যে দু’টি খারাপ। কেন সারানো হয়নি, তাঁর কোনও সদুত্তর মেলেনি। পরে কর্মীদের মধ্যে এক জন বলেন গঙ্গার জল কম, তাই জল পাম্প করা যাচ্ছে না। কিন্তু এই যুক্তিতে মেয়রকে আশ্বস্ত করতে পারেননি তাঁরা। তার পরেই মেয়র তাঁদের থেকে মুচলেকা দিতে বলেন। সাফ জানিয়ে দেন, কত শীঘ্র এই সমস্যা মেটানো সম্ভব, সেই প্রতিশ্রুতি পেলে তবেই তিনি যাবেন। প্রায় চার ঘণ্টা পরে রাত ৮টা নাগাদ মেয়রকে লিখিত ভাবে জানানো হয় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দু’টি পাম্প সারানো হবে এবং জল সমস্যাও মিটবে।
পরে মেয়র বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জল সরবরাহ ঠিক না হলে আমি কঠিন পদক্ষেপ করব।” |