পরিকল্পনা ছিল একগুচ্ছ। সেই পরিকল্পনা দ্রুত রূপায়ণের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে একটি পার্কিং লট ছাড়া পরিকল্পনা রূপায়ণের আর কোনও প্রতিফলন নেই। পাঁচ নম্বর সেক্টরে যাতায়াত করা আইটি কর্মী থেকে গাড়িচালকদের অভিযোগ, পার্কিং সমস্যা মেটার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে প্রশাসনের দাবি, বাস টার্মিনাস যেমন বাড়ানো হবে, তেমনই ছোট গাড়ির জন্য একাধিক পার্কিং-এর ব্যবস্থা করার পরিকল্পনাও পর্যায়ক্রমে করা হবে।
বাম আমলে পার্কিং-সমস্যা মেটাতে একাধিক বার নানা পরিকল্পনার কথা বলা হলেও আখেরে তেমন কোনও কাজ হয়নি। নতুন সরকার দায়িত্ব হাতে নিয়েই একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা জানায়। ইতিমধ্যে পাঁচ নম্বর সেক্টরে গাড়ির চাপ বেড়েছে। বেড়েছে বাস। তার উপর একাধিক রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল, বিনোদনক্ষেত্র ঘিরে নিত্য দিন অসংখ্য গাড়ির যাতায়াত এই চত্বরে। অভিযোগ, অবিলম্বে প্রকল্পগুলি কার্যকর না করলে সমস্যা আরও বাড়বে।
২০০৬-২০০৭ আর্থিক বছরে পাঁচ নম্বর সেক্টরের জন্য নবদিগন্ত শিল্পনগরী নামে একটি প্রশাসনিক সংস্থা তৈরি হয়। ৪৩২ একর জায়গায় বর্তমানে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কাজ করছেন। ফলে গাড়ির সংখ্যাও কম নয়। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত একটি হিসাব অনুযায়ী, ব্যস্ত সময়ে পনেরো থেকে কুড়ি হাজার গাড়ি চলাচল করে এই সেক্টরে। কিন্তু এলাকায় রাস্তা মাত্র ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। ফলে গাড়ি পার্কিং এর জায়গার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। |
যাদবপুরের বাসিন্দা কৌশিক ঘোষ বলেন, “বাধ্য হয়ে ওয়েবেলের গলিতে গাড়ি রাখি। রোজ যানজট। পার্কোম্যাট হলে সমস্যা মেটে।” ছোট গাড়ির পাশাপাশি শিল্পতালুকের দাবি মেনেই বেড়েছে বাসের সংখ্যা। কিন্তু বেসরকারি বাসের জন্য আলাদা কোনও টার্মিনাস নেই। এটিও অতিরিক্ত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যদিও পার্কিং সমস্যার সমাধানে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এলাকা পরিদর্শনের পরে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একাধিক বাস টার্মিনাসের এবং একটি উন্নতমানের পার্কোম্যাট তৈরির কথাও বলেছিলেন।
ইতিমধ্যে একিউ ব্লকে একটি প্লটে ছোট গাড়ির পার্কিং তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি নলবনের কাছে যৌথ উদ্যোগে আরও একটি পার্কিং-এর ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়াও এক সরকারি দফতরের পাঁচ একর ও তার পাশেই একটি দেড় একর জমিতে পার্কোম্যাট তৈরির পরিকল্পনাও করা হয়।
সমস্যা ঠিক কোথায়?
নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, দু’টি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি জমি সরকারি দফতরের। কিন্তু সেই দফতরের তরফে কোনও অনুমোদন মেলেনি। অন্য জমিটিতে পার্কোম্যাটের পরিকল্পনা চলছে।
নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পার্কিং সমস্যা মেটাতে বাস টার্মিনাসের সংখ্যা যেমন বাড়ানো হবে তেমনই ছোট গাড়ির জন্য একাধিক পার্কিং-এর ব্যবস্থা করা হবে। একটি পার্কিং লট চালুও করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলির কাজ হবে।”
পুরমন্ত্রী বলেন, “পার্কোম্যাট তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা পালন করব। পর্যায়ক্রমে কাজগুলি করা হবে। তাই সময় লাগছে। তবে একটি পার্কোম্যাট তৈরির ক্ষেত্রে জমি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। সেটা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করছি।”
কবে এই প্রকল্পগুলি কার্যকরী হবে সে সম্পর্কে অবশ্য নবদিগন্ত শিল্পনগরী বা নগরোন্নয়ন দফতর কারও তরফেই সদুত্তর মেলেনি। |