দীর্ঘ দিন ধরে কসবার বিজন সেতুর মুখে এবং গড়িয়াহাটের সংযোগস্থলে বাস থামিয়ে চলেছে যাত্রী ওঠা-নামা। এর ফলে যে কোনও সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তা ছাড়া, এর জন্য সেতুর মুখে প্রায়ই যানজট হয় বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রী ও স্থানীয় মানুষের।
বাস থামার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া অন্য কোনও জায়গা থেকে বাসে ওঠা-নামা করা শহরের যান নিয়ন্ত্রণের বিধি অনুযায়ী বেনিয়ম। বেনিয়মই কার্যত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে কসবার বিজন সেতু এবং গড়িয়াহাটের সংযোগস্থলে।
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে বিজন সেতু এবং গড়িয়াহাটের সংযোগস্থল এমনিতেই দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। বাসিন্দারা জানান, এই এলাকায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। এলাকার বাসিন্দা এবং নিত্য যাত্রী সমরেশ রায় বলেন, “নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে বাস বা অটো ধরতে গেলে অনেক সময় লাগে। সেতুর মুখ থেকে বাস এবং অটোয় সহজেই ওঠা যায়। সময়ও কম লাগে।” |
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী গড়িয়াহাট এবং বিজন সেতুর সংযোগস্থল দক্ষিণ শহরতলির ব্যস্ততম রাস্তাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সারা দিন এই রাস্তায় যানাবাহনের চাপ খুব বেশি থাকে। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে এই রাস্তা পূর্ব কলকাতা এবং ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের যোগাযোগ রক্ষা করছে।
এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এই ধরনের বিশৃঙ্খলার জন্য কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের একাধিক কর্তা যাত্রী, চালক এবং কন্ডাক্টরদের অসচেতনতাকে দায়ী করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক প্রচার করেও যাত্রীদের সচেতনতা বাড়ানো যায়নি। নিয়ম ভাঙার জন্য বিভিন্ন যানবাহনের চালক এবং কন্ডাক্টরদের জরিমানাও করা হয়। আবার যাত্রীরাও বাস ধরার জন্য ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন। অনেক বার তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হলেও ফের একই ঘটনা ঘটছে।
নিত্যযাত্রীরা জানান, বিজন সেতু এবং গড়িয়াহাটের সংযোগস্থলে বাস ধরার জন্য যে নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে তা অনেকটা পিছনে। তাই সেতুর মুখে বাস ধরতে সুবিধে হয়। কেউ আর দু’পা হেঁটে নির্ধারিত জায়গা থেকে বাস ধরতে যেতে চান না। বিজন সেতুর মুখ দিয়েই নিয়মিত বাস ধরে সল্টলেকের কর্মস্থলে যান এলাকার বাসিন্দা অমিত রায়।
তিনি বলেন, “এত খেয়াল রেখে কোনও যাত্রীই যাতায়াত করেন না। কোনও বিপদ হলে সবাই কয়েক দিন সতর্ক থাকেন। তার পরে আবার সেই একই কাজ করেন।”
ডিসি ট্রাফিক দিলীপ আদক বলেন, “শহরের সর্বত্র বাস দাঁড়ানোর জন্য নির্ধারিত জায়গা রয়েছে। যাত্রীরা সেখান থেকে উঠলেই আমাদের যান নিয়ন্ত্রণের সুবিধা হয়। তাতে শহরে গাড়ির গতিও বাড়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে সাধারণত যাত্রীরা পথের সম্পর্কে সচেতন নন। একা পুলিশের পক্ষে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।” |