ভর সন্ধ্যেবেলায় মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে গয়না লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মন্তেশ্বরের মালডাঙা বাজারে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার এলাকার প্রায় সমস্ত দোকান বন্ধ রাখা হয়।
ওই দোকানের মালিক সনাতন ধারার অভিযোগ, এ দিন দোকান বন্ধ করার আগে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি লাল শালুতে সোনা ও রূপোর কিছু গয়না বাঁধছিলেন তিনি। আচমকা জনা তিনেক যুবক ঢুকে পড়ে দোকানের শাটার নামিয়ে দেয়। তারপরেই তাঁর মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে লাল শালু মোড়া গয়নাগুলো ও বেশ কয়েক হাজার নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়। দোকানে সাজানো দুল, কানপাশা, রূপোর তোড়া জাতীয় আরও কিছু গয়নাও নিয়ে নেয় তারা। সনাতনবাবু প্রতিবাদ করলে ওই দুষ্কৃতীরা তার মাথায় রিভলভারের বাঁট দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। |
লুঠের প্রতিবাদে বন্ধ দোকানপাট। —নিজস্ব চিত্র। |
মিনিট দশেকের মধ্যে কাজ সেরে বাইরে বেরিয়ে পড়ে ওই তিন জন। বাইরে অপেক্ষায় ছিল তাঁদের আরও দুই সঙ্গী। দুষ্কৃতীরা বেরোতেই চিৎকার জোড়েন সনাতনবাবু। চিৎকার শুনে পাশের এক স্টেশনারি দোকানের মালিক মনোরঞ্জন মণ্ডল ছুটে আসেন। তাঁকে আসতে দেখে বোমা ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। বোমার স্প্লিন্টারে পায়ে আঘাত লাগে মনোরঞ্জনবাবুর। ততক্ষণে আওয়াজ পেয়ে বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা ওই দলটিকে তাড়া করতে শুরু করে। তবে বোমা ফাটাতে ফাটাতে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার, কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার, মন্তেশ্বর থানার ওসি শেখ বখতিয়ার হোসেন। দোষিদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস দেন তাঁরা। তবে রাতের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার দোকানপাট বন্ধ রাখেন মালডাঙা এলাকার ব্যবসায়ীরা। মন্তেশ্বর থানায় একটি স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। বাজার কমিটির সম্পাদক শুভেন্দু কোঙার বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। দোষিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।” তবে এখনও কাউকেই ধরেনি পুলিশ। স্থানীয়দেরও দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। শুধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়, স্কুল, পঞ্চায়েত ভবনেও লুঠপাট চলছে। নভেম্বরের শেষেই পিপলনের একটি স্কুলে হানা দিয়ে গোটা দশেক কম্পিউটার লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। ভাগরা মূলগ্রাম পঞ্চায়েত ভবনেও হামলা চালায় তারা। এছাড়া জেলা জুড়ে নানা মন্দিরে চুরি তো চলছেই। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশন তুলছেন সাধারণ মানুষ। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, প্রত্যেকটি ঘটনারই তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে।
|