বুদ্ধদেবের সভার জন্য চেয়েও না পাওয়া মাঠে সমাবেশ ডাকল তৃণমূল। বুদ্ধের সভার সপ্তাহ ঘোরার আগেই বর্ধমান শহরে এই সমাবেশ করতে চলেছে তারা। রবিবার আলমগঞ্জের গোডাউন মাঠে সেই সভায় আসার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জনসভার আয়োজন করতে মাঠ পাওয়া নিয়ে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম নেতারা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবারের ওই সভার জন্য প্রথমে তাঁরা চেয়েছিলেন বর্ধমান শহরের সব চেয়ে বড় মাঠ উৎসব ময়দান। কিন্তু পৌর উৎসবের প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে পুরসভা সেখানে সভার অনুমতি দেয়নি। এর পরে তাঁরা আলমগঞ্জের বেসরকারি মালিকানাধীন গোডাউন মাঠে সভা করতে চান। অভিযোগ, মাঠের মালিক প্রথমে অনুমতি দিলেও পরে ফিরিয়ে নেন। ফলে, শেষ পর্যন্ত তুলনামূলক ভাবে ছোট আলমগঞ্জের হারাধনপল্লির মাঠে সভা করে সিপিএম। সেই সভায় বেশ ভিড় হয়েছিল।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার অভিযোগ করেন, তৃণমূলের চাপেই আলমগঞ্জের গোডাউন মাঠের মালিক তাঁদের সভার অনুমতি প্রত্যাহার করেন। সিপিএমকে সভার অনুমতি দিয়েও প্রত্যাহার করলেও তৃণমূলকে সভা করতে দিচ্ছেন কেন, এই প্রশ্নে মাঠের মালিকপক্ষের এক সদস্য বলেন, “মঙ্গলবার ওই মাঠে সভা করতে দেওয়ায় ব্যাপারে আমাদের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল। তা ছাড়া, শাসকদল সভা করতে চাইলে, অনুমতি না দিয়ে উপায় কী!”
এক সময়ের ‘লাল দুর্গ’ বর্ধমানে ২০১১ সালে বিধানসভা ভোট থেকেই সিপিএমের সংগঠনে ধস নেমেছে। এই অবস্থায় গত মঙ্গলবারের সভায় ভিড় থেকে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব বেশ আশাবাদী। সিপিএম সূত্রের দাবি, শহরের যে সব নেতা তৃণমূলের ‘চাপে’ এত দিন কার্যত প্রকাশ্যে আসতে পারছিলেন না, তাঁরাও সে দিন মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন।
লোকসভা ভোটের আগে বর্ধমান শহরে সিপিএমের সভায় ভিড় উপচে পড়া দেখেই এই ‘পাল্টা’ সভা ডাকা হয়েছে, এ কথা অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল নেতারা। তবে সভা সফল করতে ইতিমধ্যে দলের তরফে প্রচার শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, দলের অন্দরে নেতারা বলছেন, রবিবার এমন জমায়েত করা হবে, যাতে মানুষ সিপিএমের সভার কথা ভুলে যান। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে এই সভায় জমায়েতের চেষ্টা চলছে বলেও তৃণমূল সূত্রে খবর।
শুক্রবার সভাস্থল পরিদর্শন করে তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি তথা সদ্য স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের দাবি, “যে মাঠে পাঁচ হাজার মানুষ ধরে না, সেখানে লক্ষাধিক লোক হয়েছে বলে মিথ্যা প্রচার করছে সিপিএম। কিন্তু ওই ছোট মাঠে আমাদের পক্ষে সভা করা সম্ভব নয়। তাই আমরা বড় মাঠে সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জমায়েতের উত্তর জমায়েত দিয়েই দেখিয়ে দিতে চাই, মানুষ কাদের সঙ্গে রয়েছেন।”
|