উৎসবে খুশি গারোপাড়ায়
সারারাত চলে প্রার্থনা। সঙ্গে পিঠে ভাজা। বুধবারের সকালের আলো ফুটতেই কলার পাতায় মোড়ানো সেই পিঠে মিলেছে পথচলতি মানুষদেরও। গ্রামের একজনের বাড়িতে বসেছে রান্নার আসর। গোটা গ্রামের মানুষ একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া সারবেন। সন্ধ্যা পড়তেই গোটা গ্রামে জ্বলে উঠেছে আলো। চার্চ দুটি সাজিয়ে প্রার্থনার সুরে সেখানেও চলছে গান। বড়দিনের ছোঁয়ায় কোচবিহারের গ্রাম গারোপাড়ায় যেন খুশির হাওয়া। সকাল সকাল কেক হাতে গ্রামে পৌঁছে যান নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বড়দিনে সবাই আনন্দে মেতে উঠে। কিন্তু, এই গ্রামের সমস্ত মানুষ একসঙ্গে মিলে যে ভাবে উৎসবে মেতেছেন তা খুব কম দেখা যায়। রাত জেগে প্রার্থনার সঙ্গে সঙ্গে পিঠে ভাজা। একসঙ্গে সবার খাওয়া। ভাল লেগেছে।” কোচবিহার শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে গাঢ়পাড়া গ্রাম দেওয়ানহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের এক অংশ। ৪৫টি খ্রিস্টান পরিবারের বাস। কেউ দিনমজুরি করেন, কেউ সরকারি চাকুরে। গ্রামে দুটি চার্চ রয়েছে। বড়দিন এলে সেই চার্চ দু’টিকে সাজিয়ে তোলেন তাঁরা। গ্রামে ঢোকার রাস্তায় দুই পাশে গেট তৈরি করে রংবেরংয়ের আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। প্রতিটি বাড়িতে আলো জ্বালানো হয়। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। পুলিশ কর্মী গ্রামের বাসিন্দা জোসেফ তামাঙ্গ জানান, এটা গোটা গ্রামের উৎসব। সবাই একসঙ্গে রাত ১২টা থেকে প্রার্থনা শুরু করেন, সবাই মিলে আনন্দ করেন। এলাকার প্রিয় খাবার ‘কম্বল পিঠে’। চালের গুড়োর সঙ্গে কয়েকটি জিনিস মিশিয়ে কলার পাতায় মুড়িয়ে ওই পিঠে তৈরি করা হয়। বাসিন্দারা জানান, সারা রাত ধরে পিঠেপর্ব চলার পর সকালেও কেউ ঘুমোতে যান না। সকাল থেকে শুরু হয় চার্চ সাজানোর কাজ। সেই সঙ্গে খাওয়া দাওয়া। প্রতিবছর সবাই মিলে চাঁদা তুলে একসঙ্গে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ বারে গ্রামের বাসিন্দা অশেষ পাতাংয়ের ছেলে চাকরি পাওয়ায় তিনিই খাবারের সব দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর বাড়িতেই বসেছে মাছ, মাংস, ডাল, ভাত খাবারের আয়োজন। গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা সেখানেই মেতেছে। গ্রামের পিটারসন মাড়াক বলেন, “আমরা সবাই মিলে এক হয়ে যিশুকে স্মরণ করে আনন্দে মেতে উঠি।” আর এক বাসিন্দা অয়ঞ্জেলা সাংমা দিনমজুরি করে সংসার চালান। তিনিও সারা রাত ধরে পিঠে তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, “সারা বছর তো কাজ করতেই দিন চলে যায়। এই একটা দিন আনন্দ করি। আজ একটু ভালমন্দ খাব।” সকালেই ওই গ্রামে যান কোচবিহার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আর্শাদ হোসেন। পিঠে খেতে খেতে তিনি বলেন, “বড়দিনে বহু জায়গায় কেক খেয়েছি। কিন্তু কম্বল পিঠে পাইনি। এ এক অন্য রকম আনন্দে মাতলাম।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.