নদী পেরিয়ে প্রায় প্রতি রাতেই বাংলাদেশি গরু পাচারকারীরা ঢুকে পড়ে গ্রামে। এ দেশের পাচারকারীদের কাছ থেকে গরু নিয়ে ফের তাঁরা দেশে ফিরে যায়। মাঝেমধ্যে প্রতিবাদের চেষ্টা করেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু পাচারকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করায় তাঁরা প্রতিরোধ করতে পারেন না। এ দিকে, ফসলের খেতের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ফলে ক্ষতি হচ্ছিল অনেকেরই। অবশেষে, গ্রামের মধ্যে দিয়ে গরু পাচার রুখতে একজোট হলেন বাগদার সীমান্ত-লাগোয়া রণঘাট পঞ্চায়েতের বেড়বাড়ির বাসিন্দারা। বুধবার সকালে বাংলাদেশি পাচারকারীরা গ্রামের মধ্যে গরু নিয়ে যাওয়ার সময়ে তাদের আটকে দেন এলাকার মানুষজন। পুলিশ এসে গ্রেফতার করে ১১ জনকে। উদ্ধার করা হয় ৭টি গরু। |
বনগাঁর এসডিপিও রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, “ওই এলাকা দিয়ে গরু পাচার রুখতে ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাগদা থানার পুলিশকে আরও তৎপর হতে বলা হয়েছে।” যদিও বাস্তবে ওই গ্রাম দিয়ে গরু পাচার বন্ধ করা আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে এলাকাবাসীর। ওই এলাকার সীমান্তে কোনও কাঁটাতার নেই। থানা থেকে গ্রামের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। সে কারণেই বিশেষ ঘটনা ছাড়া পুলিশের পক্ষে সময়ে পৌঁছনো অসুবিধার বলে দাবি মানুষের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের কার্তিক গায়েন বলেন, “পাচারে শুধু যে ফসল নষ্ট হয় তাই নয়, গ্রামের বাড়ি থেকে গরু-ছাগলও পাচারকারীরা চুরি করে নিয়ে যায়।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার ভোরে একটি গাছ তলায় গরু নিয়ে পালানোর সুযোগের অপেক্ষা করছিলেন বেশ কিছু পাচারকারী। সে সময়ে মাঠে চাষ করছিলেন কিছু চাষি। তাঁরা দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীদের খবর দেন। সকলে মিলে পাচারকারীদের ঘিরে ফেলে পুলিশে খবর দেয়। |
এই এলাকা দিয়েই পাচার হচ্ছিল গরু। |
বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচারের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু গ্রামবাসীদের এমন প্রতিরোধের চিত্র বিরল। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ইদানীং গরু পাচার অবশ্য কমে গিয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। তবে নিরাপত্তা রক্ষীদের ফাঁকি দেওয়ার জন্য গরু পাচারের সঙ্গে মহিলারাও যুক্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। |