মাথার চুল কেটে খাটের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে অন্তঃসত্ত্বা এক বধূকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয়েছে রেহেনা বিবি (২৪) নামে ওই বধূর শ্বশুরকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রেহানার শ্বশুরবাড়ি দেগঙ্গার সোহাস কুমারপুরের যাদবপুর গ্রামে। বছর আটেক আগে ওই এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ রুকুবউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় শাসনের গলসিয়া গ্রামের রেহানার। বিয়েতে যথাসাধ্য যৌতুক দিয়েছিলেন মেয়ের বাবা।
কিন্তু অভিযোগ, আরও পণের দাবিতে অত্যাচার চলত তরুণী বধূটির উপরে। বিয়ের তিন বছরের মাথায় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রেহানা। মেয়ে হওয়ায় মায়ের উপরে অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়ে বলে অভিযোগ। অত্যাচারের জেরে টিঁকতে না পেরে একবার পাকাপাকি ভাবে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে এসে উঠেছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু সে বার রুকুবউদ্দিন স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি শুরু করেন। গ্রামে সালিশি বসে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন সে সময়ে কথা দিয়েছিলেন, বধূর উপরে আর অত্যাচার করবেন না। কিন্তু সে ছিল শুধু কথার কথা। রেহানার বাপের বাড়ির লোকজন জানান, নিগ্রহ কোনও ভাবে কমেনি। টাকা চেয়ে মারধর চলতেই থাকে।
রেহানার দাদা নিজামউদদ্দিন পুলিশকে জানিয়েছেন, বোন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তারপরেও নির্যাতন কমেনি। গত শুক্রবার ঘটনা চরমে ওঠে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেহানার চুল কেটে দেয়। তারপরে খাটের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে বধূর বাপের বাড়ি লোকজন এবং এলাকার কিছু বাসিন্দা দরজা ভেঙে উদ্ধার করেন রেহানাকে। তত ক্ষণে পালিয়ে গিয়েছে রেহানার স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ি। রুকুবউদ্দিনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা।
অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই বধূকে নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয়েছিল আরজিকরে। মঙ্গলবার সেখানেই মারা যান ওই বধূ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতেও রেহানা জানিয়েছেন, তাঁকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনই খাটের সঙ্গে বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। রেহানার শ্বশুর সাহাজাত আলিকে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকিরা পলাতক।
অন্য দিকে, দিন কয়েক আগে বড়বাঁকড়া গ্রামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তারই মামাতো দাদা রেজাউল সর্দারের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ, পুলিশকে ঘটনার কথা জানাবে বলায় মেয়েটির মুখে কীটনাশক ঢেলে দেন ওই যুবকের মা মমতাজমিরা বিবি। গায়ে কেরোসিনও ঢালা হয়। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী গণধোলাই দেন মমতাজমিরাকে। পরে মা-ছেলে বেপাত্তা হয়ে যায়। মঙ্গলবার গভীর রাতে গ্রামে ফিরলে পুলিশ গ্রেফতার করে রেজাউলের মাকে। ছেলের খোঁজে তল্লাশি চলছে। মেয়েটির চিকিৎসা হয় হঠাৎগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে। |