বন্যার্তদের জন্য ৯টি স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র
ত অক্টোবর মাসের কথা। দুপুরের খাওয়াদাওয়া সেরে বাড়ির দালানে বিশ্রাম করছিলেন কেশপুরের পিন্টু দলবেরা। হঠাৎই দেখেন, জলের স্রোত ঢুকে পড়েছে বাড়ির মধ্যে। বাড়িতে তখন বাবা-মা’র সঙ্গে রয়েছেন স্ত্রী এবং দেড় বছরের মেয়ে। কী করবেন, শুরুতে ভেবেই পাচ্ছিলেন না। পরে প্রতিবেশীদের মতো হাঁটুজল ঠেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আশ্রয় নেন স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে। বন্যার সময়কার এই চেনা চিত্রটা এ বার বদলে যেতে পারে। জেলায় বন্যার্তদের জন্য এবার স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র (ফ্লাড সেন্টার) গড়ে উঠতে চলেছে। ৯টি এমন কেন্দ্র তৈরির অনুমোদন মিলেছে। দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে। দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের জেলা আধিকারিক সত্যব্রত হালদার বলেন, “৯টি ফ্লাড সেন্টার তৈরি হবে। কোন এলাকায় এই সেন্টার তৈরি হবে, তাও ঠিক হয়েছে।”
অবিরাম বৃষ্টি এবং জলাধার থেকে প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে চলতি বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে তিন দফায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত অক্টোবরের বন্যায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরিস্থিতি দেখে এক সময় ১০৪টি অস্থায়ী ত্রাণ শিবির খুলতে হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডেকে পাঠানো হয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ২৬টি ব্লকে কমবেশি দুর্যোগের প্রভাব পড়ে। জানা গিয়েছে, জেলার বন্যা-প্রবণ বলে পরিচিত এলাকাতেই স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি হবে। ঠিক হয়, সাঁকরাইলে ২টি কেন্দ্র তৈরি হবে। বিনপুর-২, ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর-১, কেশপুর, দাঁতন-১, দাসপুর-১ এবং ঘাটালে একটি করে আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা হবে। কেশপুরে ২টি কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হলেও ১টির অনুমোদন মিলেছে। সবমিলিয়ে ১০টি স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র তৈরির জন্য জেলা থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয় রাজ্যে। তার মধ্যে ৯টির অনুমোদন মিলেছে। এক-একটি কেন্দ্র তৈরিতে খরচ হবে ৫০ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে ১০ লক্ষ টাকা করে ৯টি কেন্দ্রের জন্য ৯০ লক্ষ টাকা মঞ্জুরও হয়েছে। বরাদ্দ অর্থে দ্রুত কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।
এক-একটি কেন্দ্রে তিনতলা বাড়ি থাকবে। সেখানে সব মিলিয়ে ২০০ জন মানুষের থাকার ব্যবস্থা থাকবে। গবাদি পশু রাখার জন্য আলাদা ঘর থাকবে। সঙ্গে রান্নাঘর ও শৌচাগারও থাকবে। তবে প্রশ্ন হল, বন্যার সময় বাদে অন্য সময়ে এই কেন্দ্রগুলি কী ভাবে কাজে লাগানো হবে? প্রশাসন সূত্রে খবর, এ জন্য গোড়া থেকে কেন্দ্রগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। এই সব কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য সচেতনতা সভা হতে পারে অথবা অস্থায়ী ভাবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও চলতে পারে। তাছাড়াও কেউ কোনও কাজের জন্য ভাড়ায় চাইলে তা-ও দেওয়া হতে পারে। এই স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি হলে মানুষের সমস্যা কিছুটা কমবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। অন্তত, প্রস্তাবিত কেন্দ্রগুলি তৈরি হলে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে তাঁদের হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না। অর্থ মঞ্জুর হয়েছে। এ বার কবে স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়, সেটাই দেখার।

কোথায় হবে আশ্রয় কেন্দ্র
সাঁকরাইল নেপুরা, দক্ষিণদারি
বিনপুর ২ মুড়ানশোল
ঝাড়গ্রাম চিতলবনি
গোপীবল্লভপুর-১ জানাঘাটি
কেশপুর সুদতপুর
দাঁতন-১ পুণ্ড্রা
দাসপুর-১ নিজ নাড়াজোল
ঘাটাল দিঘা আনন্দপুর


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.