বড়দিনে পার্কমুখী গোটা শহর
ছর শেষে বড়দিনের সকালে পরিজনদের সঙ্গে আনন্দে মাতলেন শহরবাসী।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় খুব একটা শীত ছিল না। সবে, দু’-তিন দিন হল শীত পড়েছে। আর বড়দিনের সকালে সেই শীতের রোদ গায়ে মেখে পার্কে পার্কে ভিড় জমালেন আট থেকে আশি, সক্কলে। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে, কেউবা পরিজনদের সঙ্গে। দিনভর মাতলেন হইহুল্লোড়ে। শহর এবং শহরতলির প্রতিটি পার্কে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দ শিশু উদ্যানে বুধবার ৫ হাজারেরও বেশি ছেলেমেয়ে এসেছে। ফি বছরের মতো এ বারও শিশু উদ্যানে এক অনুষ্ঠান হয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে কেক-চকোলেট বিতরণ করা হয়। শহরের এই পার্কের পরিদর্শক সুব্রত সরকার বলছিলেন, “এ বার ভিড়টা যেন আরও বেড়েছে। বাবা-মা’য়ের হাত ধরে প্রচুর ছেলেমেয়ে এসেছে। আনন্দ করেছে।”
গোপগড় ইকো ট্যুরিজম পার্কে বুধবার ভ্রমণার্থীদের ভিড়।
মেদিনীপুরে আরও তিনটি পার্ক রয়েছে। গোপগড় পার্ক, পুলিশ লাইন পার্ক এবং ক্ষুদিরাম পার্ক। বড়দিনের সকালে প্রতিটি পার্কেই ভিড় জমতে শুরু করে। শুধু পার্ক নয়, পিকনিক করতে অনেকে নদী ধারেও জড়ো হন। মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মধ্যে রয়েছে কংসাবতী নদী। নদীর দু’দিকে প্রচুর খোলা জায়গা। এমন দিনে কে আর বাড়িতে বসে থাকবেন! কেউ বন্ধুদের নিয়ে, কেউ সপরিবার বেরিয়ে পড়েছিলেন। সঙ্গে হাঁড়ি, কড়াই-সহ রান্নার উপকরণ। সকালের দিকে শীতে কাঁপতে থাকা, পরে শীতের রোদ গায়ে মেখে ঘুরে বেড়ানো, তার মধ্যে রান্নার উনুনে হাত সেঁকে নেওয়া, জমিয়ে খাওয়াদাওয়া সব মিলিয়ে দিনটি ভালোভাবেই উপভোগ করেছেন অনেকে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এক-দেড় দশক আগেও এত পার্ক ছিল না। পরে ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরি হয়েছে। মাঝে একটা সময় জঙ্গলমহলে অশান্তি ছড়িয়ে ছিল। তখন ভ্রমণপিপাসু লোকেদের যাতায়াত কমেছিল। তবে, এখন সেই সব দিন অতীত। পার্কগুলোকে সাজাতে নতুন নতুন পরিকল্পনা করছে বন দফতর। মেদিনীপুরের পাশাপাশি খড়্গপুরের হিজলি, সাঁকরাইলের দুর্গাহুড়িতে বড় পার্ক রয়েছে। চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন পার্কটিও বড়। প্রচুর গাছপালা রয়েছে। গোয়ালতোড়ে রূপারঘাঘরা, মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া, গুড়গুড়িপালেও পার্ক রয়েছে। রূপারঘাঘরা পার্কটি অবশ্য এখনও বন্ধ। মূলত, এলাকার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এক সময় শহরতলিতে ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরিতে উদ্যোগী হয় বন দফতর। দফতরের আধিকারিকেরা মনে করেছিলেন, এর ফলে একদিকে যেমন এলাকার সৌন্দর্য বাড়বে, তেমনি পার্ককে ঘিরে স্থানীয়দের রোজগারের সুযোগ তৈরি হবে। হয়েছেও তাই। পার্কের সামনে বিভিন্ন স্টল হয়েছে। কোনওটা চায়ের, কোনও স্টল ফাস্টফুডের। পিকনিকের পাশাপাশি প্রচুর মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতেও পার্কে আসেন।
পার্কে বসেছে চড়ুইভাতির আসর।
অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে এ দিন মেদিনীপুরের পার্কগুলোতে পুলিশের নজরদারি ছিল। অন্য দিকে, বড়দিনের মেলা শুরু হয়েছে শহরের চার্চ স্কুল মাঠে। বুধবার মেলা শুরু হয়। চলবে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। চার্চের সামনে বড় মাঠ রয়েছে। এরই একদিকে রয়েছে নাগরদোলা-সহ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মনোরঞ্জনের সমস্ত সরঞ্জাম। চারপাশে রয়েছে রকমারি স্টল। মাঠের বাইরেও নানা দোকান বসেছে। মেলা চত্বরের পাশাপাশি চার্চও সাজানো হয়েছে। চার্চের বাইরে-ভেতরে রয়েছে রঙিন আলো। চার্চের পাশে বসতি এলাকাও নানা রঙে সেজেছে। কোথাও টুনি বাল্ব, কোথাও এলইডি আলোর ঝলকানি চোখে পড়ছে।
সব মিলিয়ে বছর শেষের উৎসব পুরোপুরি রঙিন।

—নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.