বন দফতরের এক চিকিৎসকের গাড়ি চালককে দিয়েই একটি অসুস্থ বুনো হাতির চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন বনকর্তারা। আর তা করাতে গিয়েই বিপত্তি ঘটেছে। বন দফতরের এক পোষা কুনকির আক্রমণে মারাত্মক জখম হয়েছেন জনার্দন চৌধুরী নামে পশু চিকিৎসকের ওই গাড়ি চালক।
বনকর্মীদেরই একাংশ জানান, এ ঘটনা নতুন নয়। জনার্দনকে দিয়ে প্রায়ই এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হত। এ দিন তারই ফল হাতেনাতে পেয়েছেন ওই চালক। মঙ্গলবার মহানন্দা অভয়ারণ্যের ওই ঘটনায় গুরুতর জখম জনার্দনবাবু আপাতত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। ওই চালকের স্ত্রী আশা চৌধুরী বলেন, “পশুদের প্রতি ওঁর ভালবাসা রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা যেভাবে ওঁকে ব্যবহার করা হয় তা কখনও-ই কাম্য নয়।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলদাপাড়া উত্তর রেঞ্জের বনকর্মী জনার্দন চৌধুরী সেখানকার চিকিসৎকের গাড়ি চালক। মহানন্দা অভয়ারণ্যের সাত মাইল জঙ্গলে একটি জংলি মাকনা হাতিকে কয়েক দিন ধরেই খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখে বন কর্তাদের নির্দেশে মঙ্গলবার জলদাপাড়ার গিয়েছিলেন ওই পশু চিকিসৎক। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করার পরে জনার্দনবাবু তার পায়ে ওষুধ লাগাতে যান। সেই সময়ে আচমকা হাতিটি জনার্দনবাবুকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। কোনক্রমে হাতির হাত থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বনকর্মীরা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন। জনার্দনবাবুর পেটে বুধবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর মেরুদণ্ডের হাড়ে চিড় ধরেছে বলে জানা গিয়েছে। বন দফতরের উত্তরবঙ্গের বনপাল বিপিন সুদ বলেন, “জনার্দনবাবুকে দিয়ে চিকিৎসকেরা কিছু করিয়েছেন কিনা জানা নেই। হাতিটি খেপে গিয়ে তাঁকে আক্রমণ করেছিল বলে জানতে পেরেছি।” তবে, বনপাল ওই ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে না চাইলেও জলদাপাড়ার পশু চিকিসৎক অশোক সিংহের দাবি, “জনার্দনবাবু শুধু চালক নয়, সহকারি হিসেবেও কাজ করেন। হাতিটিকে ইঞ্জেকশন দিতে গিয়েছিলেন জনার্দন।” বন কর্মীদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক অমল সিংহের ক্ষোভ, “এ ভাবে ওঁকে দিয়ে চিকিৎসার করানো অন্যায়।” |