|
|
|
|
নৌকায় যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে উদাসীন ঝাড়খণ্ড |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি
২৫ ডিসেম্বর |
একবার নয়। একাধিকবার নৌকা উল্টে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খণ্ডে। তা সত্ত্বেও সতর্ক হয়নি রাজ্য প্রশাসন। সম্প্রতি, তার প্রমাণ মিলেছে রাঁচিতেই। রাঁচি লেকে ‘লাইফ জ্যাকেট’ না-নিয়েই স্পিড বোটে উঠেছিলেন যাত্রীরা। নৌকা উল্টে চারজন ডুবে মারা যান।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নদী, লেকে নৌকা চলাচল নিয়ে জেলা প্রশাসনগুলির কাছে সঠিক তথ্যও নেই। তবে, রাজ্য পর্যটন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল কুমার জানিয়েছেন, দফতরের সচিব এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, প্রতিটি নৌকায় লাইফ জ্যাকেট রাখতে হবে। যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে সে গুলি নিতে হবে। নৌকার বহনক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী-সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। একজন বেশি যাত্রীও নেওয়া যাবে না। দ্রুত ওই নির্দেশিকা বিভিন্ন জেলার ডেপুটি কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
জামশেদপুরে খরকাই আর সুবর্ণরেখার সঙ্গমস্থল দোমুহানি। সেখানে পূর্ব সিংভূমের সোনারি আর সরাইকেলা-খরসওয়াঁর কপালির মধ্যে গ্রামবাসীদের যাতায়াতের ভরসা ভুটভুটি নৌকাই। একটি ভুটভুটিতে ৩০-৩৫ জন ওঠেন। কিন্তু, ‘লাইফ জ্যাকেট’ কীতাই তাঁরা জানেন না। একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, পরিস্থিতি বদলায়নি। নৌকাগুলির অধিকাংশেরই বৈধ কাগজ নেই।
বিপজ্জনকভাবে নৌকা চলাচলের বিষয়ে প্রশাসনের সঠিক নজরদারি নেই, তা পূর্ব সিংভূমের জেলাশাসক অমিতাভ কৌশলের কথায় স্পষ্ট। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার ঠিক জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।” জামশেদপুরের জুবিলি লেকে ছবিটা প্রায় একই রকম। সেখানে প্যাডেল বোট চলে। কিন্তু, লাইফ জ্যাকেট দেখা যায় না কারও কাছেই।
কয়েক বছর আগে কেরলে পেরিয়ার লেকে নৌকা-সফরে গিয়েছিলেন কয়েকজন পর্যটক। নদীর তীরে হাতি দেখতে পেয়ে পর্যটকদের কয়েকজন নৌকার একদিকে চলে যাওয়ায়, সেটি একদিকে হেলে উল্টে যায়। ওই ঘটনায় কয়েকজন পর্যটকের সলিল-সমাধি হয়েছিল। তারপর থেকে পেরিয়ারে নৌকা বিহারের সময় লাইফ-জ্যাকেট নেওয়া আবশ্যক করে রাজ্য সরকার।
কিন্তু, ঝাড়খণ্ডে এখনও পর্যন্ত তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অনেক জায়গায় লাইফ জ্যাকেট থাকলেও, সেটির ব্যবহার নির্ভর করে পর্যটকের উপরই। কোথাও নৌকার যাত্রীবহন ক্ষমতার তুলনায় লাইফ জ্যাকেটের সংখ্যা অনেক কম থাকে।
বন্ধুবান্ধব নিয়ে দুমকার ম্যাসাঞ্জোরে সম্প্রতি ঘুরতে গিয়েছিলেন সোদপুরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দত্ত। ময়ুরাক্ষী নদীতে স্পিড বোটে ঘুরেছেন। তাঁর কথায়, “লাইফ জ্যাকেট নিয়ে কোনও প্রশাসনিক নির্দেশিকা ছিল না।” সাহেবগঞ্জে গঙ্গায় নৌকা উল্টে ছোট-বড় দুর্ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। গত বছর নৌকা উল্টে সেখানে ১৩ জন মারা গিয়েছিলেন। ধানবাদের বরাকর নদীতে মাইথন বাঁধের জলাধারেও বোটিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, সেখানেও লাইফ জ্যাকেটের ব্যবহার চোখে পড়ে না। ধানবাদের রাজেন্দ্র সরোবরে নৌকা বিহারের দায়িত্বে রয়েছেন পিঙ্কি সিংহ। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “লাইফ জ্যাকেট রয়েছে। পর্যটকরাই সে গুলি ব্যবহার করতে চান না।” |
|
|
|
|
|