ট্যাক্সির মিটারে ভাড়ার বিল এখনও দূর অস্ত্
ইন আছে পুরোদস্তুর, কিন্তু সেই আইনকে থোড়াই কেয়ার করেন শহরের ট্যাক্সিচালকেরা!
২০০৮ সালের ১৪ অগস্ট থেকে রাজ্য সরকার ট্যাক্সিচালকদের জন্য আইন করে, যাত্রীদের ভাড়ার রসিদ দিতেই হবে। সে জন্য গাড়িতে মিটারের সঙ্গে প্রিন্টার লাগানোও বাধ্যতামূলক করার কথা বলে সরকার। কিন্তু এর পর থেকে এই নিয়ম চালুর জন্য পর পর সময়সীমাই ধার্য হয়েছে শুধু, কিন্তু কলকাতা শহরে এখনও বাধ্যতামূলক করা যায়নি ট্যাক্সির ভাড়ার রসিদ।
একই ভাবে ৩১ ডিসেম্বর ট্যাক্সির মিটারে নতুন ভাড়া চালু এবং প্রিন্টার লাগানোর সময়সীমা ধার্য করেছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। কিন্তু নিজেদের ঠিক করা সেই সময়সীমার মধ্যে ‘টার্গেট’ পূরণ করতে পারল না খোদ সরকারই। আর তার জেরেই সেই নির্দিষ্ট সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হল আরও তিন মাস, ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
সরকারের পক্ষ থেকে ট্যাক্সিমালিকদের জানানো হয়েছিল, এখন যা ভাড়া, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই মতো সংশোধন করা মিটার লাগাতে হবে ট্যাক্সিতে।
এমনকী, মিটারের ভাড়ার পরিমাণের প্রিন্টও দিতে হবে যাত্রীদের। ভাড়া নিতে গিয়ে ট্যাক্সিচালকেরা যাতে কোনও মতে বেশি না নিতে পারেন, তাই এই প্রিন্ট দেওয়াটা বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করেছিল সরকার। তবে, এই সিদ্ধান্ত শহরের অধিকাংশ ট্যাক্সিই মানছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় প্রায় ২৪ হাজার ট্যাক্সি চলে। সরকার যে সময়সীমা দিয়েছিল, তার মধ্যে সব ট্যাক্সিতে মিটার সংশোধন এবং প্রিন্টার লাগানোর কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলে দাবি করছেন পরিবহণ কর্তারাই। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ট্যাক্সির মাত্র ৩০ শতাংশ মিটার সংশোধন এবং প্রিন্টার লাগানোর কাজ শেষ করেছে বলে দাবি কর্তাদের। এক পরিবহণ-কর্তার কথায়, “এত সংখ্যক ট্যাক্সিতে এত চটজলদি এই কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। সে কারণেই ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, তার মধ্যে প্রিন্টার লাগানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
যাত্রীদের অবশ্য অভিযোগ, ইতিমধ্যে যে সমস্ত ট্যাক্সিতে প্রিন্টার লাগানো হয়েছে, তাদেরও অনেকেই ভাড়ার প্রিন্ট-আউট (রসিদ) দিচ্ছেন না। কোনও কোনও ট্যাক্সিতে আবার মিটারও ঠিক মতো কাজ করে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাই ট্যাক্সিচালকেরা যাত্রীদের কাছ থেকে কত ভাড়া নিচ্ছেন, তার কোনও প্রমাণও থাকছে না। শুধু প্রমাণের জন্যই নয়, রসিদে যেহেতু ট্যাক্সির নম্বর, দিনক্ষণ— সব প্রিন্ট করা থাকে, পরে সমস্যায় পড়লে তার মাধ্যমেই ট্যাক্সিটি খুঁজে বার করা যাবে। যাত্রীদের অভিযোগ, আইন থাকাই সার। তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই ট্যাক্সিচালকদের।
কলকাতা ট্যাক্সি ড্রাইভার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমল ঘোষ বলেন, “ট্যাক্সির পুরনো মিটার বদলাতে লাগে প্রায় ২১২ টাকা। এবং প্রিন্টারের জন্য কাগজ কিনতে খরচ পড়ে ২৪ টাকার কাছাকাছি। অথচ তা সত্ত্বেও ট্যাক্সির মালিকেরা যাত্রীদের ভাড়ার রসিদ দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন না। তাঁর কথায়, “ট্যাক্সির চালক নয়, এই দায়িত্ব রয়েছে ট্যাক্সির মালিকের উপর। শুধুমাত্র প্রশাসনিক পর্যবেক্ষণের অভাবে ট্যাক্সিমালিকেরা এই নিয়ম অমান্য করে চলেছেন। এটা আইনি অপরাধ। এর জন্য তাঁদের শাস্তি পাওয়া উচিত।”
বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, “এ রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটেছে। আমাদের কাছেও প্রচুর অভিযোগ আসছে। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থাও নিচ্ছি।” তিনি এ-ও বলেন, “বাসে টিকিট না দিলে ভাড়া কাটেন? তা হলে ট্যাক্সিতে রসিদ না দিলে যাত্রীরা ভাড়া মেটান কেন? যাত্রীদের বলা হয়েছে, ট্যাক্সিচালক ভাড়ার রসিদ না দিলে ভাড়া না দিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করুন। যাত্রীরা সচেতন হয়ে এগিয়ে না এলে, ট্যাক্সিমালিকদের ধরা সম্ভব নয়।”

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.