এ বারের বড়দিনটা একটু অন্য রকম কাটানোর কথা ভেবেছিলেন পার্কার লিওতো। সবাই যেখানে পরিবারের সঙ্গে আমোদে-আহ্লাদে এই দিনটি পালন করার কথা চিন্তা করেন, সেখানে পার্কার জানালেন, সারা দিনটাই তিনি ঘুমিয়ে কাটাতে পছন্দ করবেন।
আসলে গত ১৮টা দিন বেশ অন্য রকম ভাবেই কেটেছে পার্কারের। এই ১৮ দিনেই তিনি ভেঙে ফেলেছেন একটি রেকর্ড। বিশ্বের দ্রুততম এবং কনিষ্ঠতম পুরুষ হিসেবে স্কি করে দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছনোর কৃতিত্ব নিজের ঝুলিতে পুরে ফেলেছেন ১৯ বছরের এই ছাত্রটি। এর আগে ২৪ দিনে এই রেকর্ড করেছিলেন নরওয়ের এক ব্যক্তি। দক্ষিণ মেরু প্রদেশের উপকূল ভাগ রস আইস শেল্ফ থেকে সঙ্গী ডুগ স্টুপের সঙ্গে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রওনা দেন পার্কার লিওতো। কাল দুপুর দেড়টা নাগাদ পৃথিবীর দক্ষিণতম প্রান্তের শীর্ষ বিন্দুতে পৌঁছন তিনি। সময় লেগেছে মাত্র ১৮ দিন চার ঘণ্টা ৪৩ মিনিট।
শুরুটা ১৪ বছর বয়সে। এর আগে উত্তর মেরুতে তিন বার অভিযানে গিয়েছেন পার্কার। জন্মসূত্রে অর্ধেক ফরাসি, অর্ধেক মার্কিন পার্কার এক জন পরিবেশবিদও। ৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে লন্ডন চলে এসেছিলেন পার্কার। আপাতত আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করছেন। কেমন ছিল এ বারের অভিজ্ঞতা? “পুরো যাত্রাটাই মানসিক”, বলেছেন পার্কার। শারীরিক কষ্ট থেকে মানসিক বিপর্যয়কে জয় করাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এই তরুণ। সাফল্যের রাস্তা সহজ ছিল না। প্রতিদিন ঘণ্টায় ২৮ কিলোমিটার পথ স্কি করতেন পার্কার ও স্টুপ। বরফ আর পাথুরে রাস্তায় সঙ্গে বয়ে নিয়ে যেতে হত ৮২ কেজি ওজনের একটি স্লেজ। ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে বইত হাড় হিম করা ঠান্ডা হাওয়া। তাপমাত্রা থাকত শূন্যের থেকে ৫০ ডিগ্রি নীচে। গত কয়েকটা সপ্তাহ শুধু শুকনো খাবার খেয়েছিলেন। ওজনও কমে গিয়েছে অনেকখানি। তবে এ সব নিয়ে ভাবতে চান না পার্কার। “বড়দিনের সকালে ঘুম থেকে উঠে আর হাঁটতে হবে না, এটা ভেবেই ভাল লাগছে। গোটা দিনটা তাই ঘুমিয়েই কাটাতে চাই,” গত কাল মেরু জয়ের পরে এটাই ছিল তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া। |