ছোট্ট জর্জের প্রথম বড়দিন। এ বছরের বড়দিনটা অবশ্য আরও একটা কারণে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ইতিহাসে এই প্রথম রানির সঙ্গে বড়দিন পালন করবে তাঁর পরবর্তী তিন প্রজন্ম। তা-ই দিনটি একটু বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করার কথা ভেবেছিলেন উইলিয়াম আর কেট। আর সেই
|
ছোট্ট জর্জ।
—ফাইল চিত্র। |
জন্যেই বাপের বাড়ির নিমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও শ্বশুরবাড়িতেই রয়ে গিয়েছেন কেট। গত বছর এই সময়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কেট। ব্রিটেনে এখন জোর জল্পনা, ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন কেট। রাজ পরিবার সূত্রে এমন খবরের সত্যতা স্বীকার করা না হলেও, ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি পরের বছরই রাজ পরিবারে আসতে চলেছে জর্জের ছোট ভাই বা বোন। কেট এখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত বছর বড়দিনে উপস্থিত ছিলেন না রাজকুমার হ্যারিও। তখন তিনি ছিলেন আফগানিস্তানে। তবে এ বারের উৎসবে উপস্থিত ছিলেন তিনিও। পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে বড়দিনের আগেই রাজ পরিবারের প্রত্যেকে সমবেত হয়েছেন নরফোকের প্রাসাদে। পূর্ব ইংল্যান্ডের সানড্রিংহামের এই প্রাসাদেই প্রতি বছর বড়দিন পালন করে ব্রিটিশ রাজ পরিবার। বড়দিনের প্রার্থনার জন্য সকালেই সেন্ট মেরি ম্যাগডালিন গির্জায় গিয়েছিলেন রাজকুমার উইলিয়াম এবং কেট। সেই খবর অবশ্য আগাম জানা ছিল দেশবাসীর। আর তাই ভিড় যেন উপচে পড়ছিল গির্জার বাইরে। প্রতি বছর গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনায় যোগ দেন অন্তত হাজার খানেক মানুষ তবে এই বছর সেই সংখ্যাটা ছিল কয়েক গুণ বেশি। কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু অবশ্যই পাঁচ মাসের জর্জ। তবে যাঁকে নিয়ে লন্ডনবাসীর উত্তেজনার শেষ নেই, সেই ছোট্ট রাজকুমারকে অবশ্য সঙ্গে নিয়ে যাননি বাবা-মা। নরফোকের বাড়িতেই ন্যানির কাছে ছিল সে।
আর তাঁকে দেখার জন্য গির্জার বাইরে যাঁরা সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছিলেন, তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে ব্যর্থ হয়েই।
প্রজাদের এমন কৌতূহল নিশ্চয় অজানা ছিল না উইলিয়াম-কেটের। তবে কেন তাঁদের আশা পূরণ করলেন না তাঁরা? উত্তর অবশ্য দিয়েছেন জর্জের বাবা নিজেই। তাঁর কথায়, খুদে জর্জকে গির্জায় নিয়ে গেলে উপস্থিত কেউই আর প্রার্থনায় মন দিতেন না। সক্কলে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন খুদে রাজকুমারকে নিয়েই। তাতে গির্জার ধর্মীয় পরিবেশ নষ্ট হয়ে পারত। আবার বেশি ভিড় হলে ঘটতে পারত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনাও। বড়দিনের উৎসবে কোনও বাধা বিপত্তি আসুক চাননি তাঁরা। আর ইংল্যান্ডের গির্জার গভর্নর হিসেবে রানিরও কড়া নির্দেশ ছিল, কোনও ভাবেই যেন ধর্মীয় পরিবেশ নষ্ট করা না হয়। সব কিছু মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। |
একান্তে। বড়দিনে সকালের প্রার্থনা সেরে গির্জা থেকে
ফিরছেন কেট-উইলিয়াম। নরফোকে। ছবি: রয়টার্স। |
রাজ পরিবারের উপহার খোলা হয়ে যায় ২৪ ডিসেম্বর রাতেই। সে জন্য এ বার আর সেন্ট মেরি ম্যাগডালিন গির্জার প্রার্থনায় যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক উপহার বিনিময় করতে নিষেধ করেছিলেন গির্জা কর্তৃপক্ষ।
এ দিন প্রার্থনা শেষ হওয়ার পর বেলা সওয়া একটা নাগাদ রানি তাঁর পরিবারের প্রায় ৩০ জন সদস্যের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। ঐতিহ্য মেনে মেনুতে ছিল টার্কি। এর পর বেলা তিনটে নাগাদ বক্তৃতা দেন রানি।
বড়দিনের পর প্রথম দিনটি ব্রিটেনে পালন করা হয় বক্সিং ডে হিসেবে। ডিউক অব এডিনবরা যুবরাজ ফিলিপ সে দিন আয়োজন করেছেন শুটিং পার্টির। শোনা যাচ্ছে, রাজকুমার হ্যারির বান্ধবী ক্রেসিডা বোনাসও উপস্থিত থাকবেন সেই পার্টিতে। |