নিজস্ব সংবাদদাতা • বুদবুদ |
গোটা বড়দিন পেরিয়ে গেল, অথচ গির্জাই খোলা হল না বুদবুদের মানকরে। ফলে সকালে প্রার্থনা করতে এসে ম্লান মুখে ফিরে গেলেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, প্রতি বছর বড়দিনের আগে থেকেই সেজে উঠত গির্জা। কিন্তু এ বার দরজায় তালা দেখে ফিকে তাঁদের বড়দিন।
ব্রিটিশ আমলে মানকরে এই গির্জা তৈরি হয়। ১৯৩৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন কর্নেল জিএম ওল্ডহ্যাম। তখন থেকে এলাকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান এটি। শুধুমাত্র খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী নন, অন্য সম্প্রদায়ের মানুও নানা অনুষ্ঠানে এখানে ভিড় জমান। এলাকাবাসীর দাবি, এত পুরনো গির্জা এলাকায় আর নেই।
এ দিন সকাল থেকেই আশপাশের এলাকার মানুষজন আসতে শুরু করেন। কিন্তু গির্জার গেট বন্ধ দেখে ম্লান মুখে ফিরে যান তাঁরা। ওই গির্জার কয়েক জন সদস্য জানালেন, প্রত্যেক বছর বড়দিনের আগে থেকে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর গির্জায় রঙ পর্যন্ত করা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, তাঁরাই গির্জাটি সাজানোর দায়িত্ব নিতেন। কিন্তু এ বার কিছু সমস্যা হওয়ায় তাঁরাও হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু আক্ষেপ যে যায়নি তা তাঁদের কথা থেকেই বোঝা গেল। গির্জার এক সদস্য বলেন, “এত বড় উৎসবের দিন। অথচ আমরা মনমরা হয়ে পড়ে আছি। কিছুই ভাল লাগছে না।” |
মানকরে সেই গির্জা। —নিজস্ব চিত্র। |
ওই গির্জার অদূরে সাহেবডাঙায় আরও একটা গির্জা রয়েছে। সেখানে অবশ্য জাঁকজমক করেই দিনটি পালন করা হচ্ছে। অনেকেই এই গির্জা বন্ধ দেখে সাহেবডাঙায় চলে যান। কিন্তু কেন তালা খুলল না গির্জায়? গির্জারই এক সদস্য জানান, কিছু আইনি সমস্যা হয়েছিল। ফলে, যাঁরা এই গির্জাটি সাজানোর ব্যবস্থা করতেন তাঁরা সরে গিয়েছেন। বড়দিনে নিঝুম গির্জা দেখে মন খারাপ সকলেরই। মানকরের হারু লোহার, বাপন লোহাররা বলেন, “অন্য বার বড়দিনে সকাল থেকে লোকে লোকারণ্য থাকত এলাকা। এ বছর সব ফাঁকা।” মাড়ো গ্রাম থেকে প্রত্যেক বছর বড়দিনে গির্জায় আসেন বাপ্পাদিত্য রায়। তিনি বলেন, “সবাই এক সঙ্গে বড়দিন পালন করা হত। কিন্তু এ বছর গির্জা বন্ধ দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল।” দুর্গাপুরের বিশপ রাইট রেভারেন্ট প্রবালকান্তি দত্ত ফোন ধরেননি। |