এলাকা বদলেও রক্ষা পায়নি ধর্ষিতা কিশোরী
ণধর্ষণের পরে বাড়ি, এলাকা পাল্টেও শেষরক্ষা হয়নি। তাই গায়ে আগুন দিয়ে নিজেকে শেষ করে দিয়েই যেন রক্তচক্ষু থেকে বাঁচতে চেয়েছিল মধ্যমগ্রামে গণধর্ষণের শিকার কিশোরীটি। মঙ্গলবার আরজিকর হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে জ্বালা জুড়োতে মাকে বারবার ঝাঁকিয়ে আগুনে দলাপাকানো কিশোরীর শরীরটা যেন এ কথাই বলতে চাইছিল।
মধ্যমগ্রামের পাতুড়িয়া এ দিন ছিল আশ্চর্য রকমের নীরব। অক্টোবরে ওই কিশোরীর গণধর্ষণের ঘটনার পরে এলাকায় ছুটে গিয়েছিলেন নেতা ও মন্ত্রীরা। প্রতিবাদ করেছিলেন এলাকার মানুষ। জানিয়েছিলেন, মেয়েটি খুব সরল স্বভাবের। অভিযুক্তরা সমাজবিরোধী। এলাকায় অবাধে মদ্যপান, মহিলাদের কটূক্তি করে বেড়ায়। কিন্তু এ দিনই তাঁরা নীচু স্বরে বলেন, “সেই সময় ঘটনার প্রতিবাদ করায় অনেক হুমকি শুনতে হয়েছে। চাপ এসেছে। তাই আর নয়।” ওই পাড়ায় থাকাকালীন শেষ দিন পর্যন্ত পুলিশ পিকেট ছিল ওই কিশোরীর বাড়িতে। তবুও পাড়া ছাড়তে হয়েছিল তাদের। স্থানীয় এক বৃদ্ধা বলেন, “পাড়ার লোকেরাই যদি এত চাপে থাকে তা হলে ওঁদের উপরে কী চাপটা ছিল বুঝুন।”
নভেম্বরের শেষ দিকে বাড়ি বদল করে এয়ারপোর্ট থানার মতিলাল কলোনিতে বেলা শীলের বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল কিশোরীর পরিবার। কিন্তু ঘটনার মূল অভিযুক্ত ছোট্টুর ঘনিষ্ঠ মিন্টা শীল জেনে যায় এয়ারপোর্ট এলাকায় তারই আত্মীয় বেলাদেবীর বাড়িতে ভাড়া নিয়েছে কিশোরীর পরিবার। তার পরে সেই বাড়িতে এসে চলতে থাকে মামলা প্রত্যাহার ও বাড়ি ছাড়ার জন্য হুমকি। এ দিন বেলাদেবী বলেন, “মেয়েটি যে এ সব কাণ্ড করে এসেছে জানলে ভাড়াই দিতাম না। মিন্টা জানানোর পরে বলে দিয়েছিলাম, ‘এক মাস সময় দিচ্ছি, বাড়ি ছেড়ে চলে যাও। পাড়ারও কেউ কেউ আপত্তি করছিল।’”
এ দিন ওই পাড়ারই এক বাসিন্দার কথায়, “ক’দিন ধরেই মিন্টা মদ্যপান করে এসে এখানে ঝামেলা করত। মেয়েটি বারান্দায় হাঁটুতে মুখ গুঁজে নিজের মনে বিড়বিড় করত। কিন্তু ঘটনাটা যে এ রকম তা বুঝতে পারিনি।” সোমবার সকালেও তাঁদের বাড়িতে যে মিন্টা এসেছিল তা স্বীকার করেছেন বেলাদেবী। তাঁর ছোট বউমা পিয়ালী শীল এ দিন বলেন, “আমাদের বাড়ির ছেলেদেরও পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে। আমার স্বামীরাই দরজা ভেঙে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সমস্ত ঘটনা জানার পরে খারাপ লাগছে।” যে ঘরের মধ্যে মেয়েটি আগুন দিয়েছিল তা তালা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
হুমকি দেওয়ার ঘটনায় মিন্টা ও বাড়িওয়ালা রতন শীলকে গ্রেফতারের পরে ব্যারাকপুর আদালতে তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন আর জি কর হাসপাতালে মোমবাতি নিয়ে কিশোরীর জন্য প্রার্থনা করে বামেদের মহিলা সংগঠন। দুপুরে মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় ঘণ্টাখানেক যশোহর রোড অবরোধও করেন মহিলারা। এ দিন কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেন, “এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ আমাদের সঙ্গে ঠিক ভাবে সহযোগিতা করছে না। সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে মেয়েকে কেবিনে রেখে চিকিত্‌সার জন্য বারবার আবেদন করছি।” এক পুলিশকর্তা বলেন, “ঘটনার পরেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার সঙ্গে কথা না বলে আর কিছু আপাতত বলা সম্ভব নয়।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.