কেটে গিয়েছে দু’দিন। রবিবার রাতে রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে ট্যাক্সিতে কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে এখনও আঁধারে হাতড়াচ্ছে পুলিশ। জানা যায়নি পলাতক দুই অভিযুক্তের পরিচয়। খোঁজ মেলেনি ট্যাক্সিটিরও। এ দিকে পুলিশের দাবি, মেয়েটির বয়ানে প্রচুর অসঙ্গতি রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ঘটনায় সোমবার গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত মহম্মদ আনোয়ারকে এ দিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পার্ক স্ট্রিটের ওই এলাকায় রাতে কোন কোন ট্যাক্সি পার্ক করা থাকে, তার খোঁজ চলছে। খোঁজ চলছে প্রত্যক্ষদর্শীর। মঙ্গলবার এক তদন্তকারী বলেন, “তিনটে ট্যাক্সির নম্বর পেয়েছি। তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। আনোয়ারকে জেরা করে বাকি অভিযুক্তদের নাম জানার চেষ্টা চলছে”। সোমবারই ১৩ বছরের মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা হলেও পুলিশ জানিয়েছে ফের তার ফরেন্সিক মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে।
পুলিশ জানায়, রিপন স্ট্রিটের ফুটপাথবাসী ১৩ বছরের ওই কিশোরীর মা সোমবার পার্ক স্ট্রিট থানার অভিযোগ করেন, রবিবার রাতে তাঁর মেয়েকে রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে ট্যাক্সিতে তুলে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এতে জড়িত পরিচিত এক যুবক, ট্যাক্সিচালক ও অন্য এক যুবক।
লালবাজার সূত্রের খবর, আনোয়ার মেয়েটির পূর্বপরিচিত। মাঝে মাঝেই সে ওই কিশোরী-সহ এলাকার বিভিন্ন মহিলাদের কুপ্রস্তাব দিত। কিছু দিন আগে ওই মেয়েটির এক বান্ধবী আনোয়ারের এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করে। তদন্তে জানা যায়, অভিযোগ মিথ্যে। এর সঙ্গে রবিবার রাতের ঘটনার যোগসূত্র আছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এ দিন বিকেল পর্যন্ত ওই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের দাবি, তার বয়ানে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। সোমবার সকালে ওই কিশোরী জানায়, রবিবার রাতে সে ওয়েলেসলি সেকেন্ড লেনে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যায়। অভিযোগ, রাত ১১টা নাগাদ বেরোনোর পরে তাকে জোর করে ট্যাক্সিতে তোলে আনোয়ার। চলন্ত ট্যাক্সিতে ধর্ষণের পরে ভোর চারটে নাগাদ রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে তাকে নামিয়ে দেয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, কিশোরীর ওই আত্মীয় জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী আপত্তি করায় রবিবার সন্ধে সাতটা নাগাদই ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মেয়েটি। রাত এগারোটা পর্যন্ত সে কোথায় ছিল, তার উত্তর মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মেলেনি।
ওই কিশোরী দাবি করেছিল, ওই রাতে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত তাকে ধর্ষণ করে আনোয়ার-সহ বাকিরা। চারটে নাগাদ বাড়ি ফিরে সে মাকে জানায়, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় ‘নাইট শেল্টারে’ ঘুমোতে গেলে ঢুকতে দেয়নি রক্ষীরা। তদন্তকারীদের দাবি, রাতে ওই কিশোরীর যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছে সংস্থাটি। সাড়ে এগারোটা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত সে কোথায় ছিল, তারও সদুত্তরও মেয়েটি দিতে পারেনি বলে গোয়েন্দাদের দাবি। পুলিশ জানায়, ধৃত মহম্মদ আনোয়ারের অন্য সহকর্মীদের দাবি, রবিবার মাঝ রাত অবধি সে তাঁদের সঙ্গে হোটেলেই ছিল। দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |