বড় দিনের দু’দিন আগেই শহরে ফের গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। এ বারও ঘটনাস্থল পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকা।
রাত পোহালেই ‘ক্রিসমাস ইভ’ পালিত হবে পার্ক স্ট্রিট জুড়ে। তাই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। বাদ নেই পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকাগুলিও। কিন্তু সেই নিরাপত্তার ফাঁক গলে ফের একটি ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে লালবাজারের কর্তারা। যদিও তাঁদের দাবি “অভিযোগ পেয়েই মূল অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে।”
রিপন স্ট্রিটের ফুটপাথবাসী, ১৩ বছরের এক কিশোরীর মা সোমবার সকালে পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগে জানান, রবিবার রাতে তাঁর মেয়েকে চলন্ত ট্যাক্সিতে তুলে গণধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় পরিচিত এক যুবক জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। এ ছাড়া, একটি ট্যাক্সির চালক এবং অন্য এক যুবকের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ করেন তিনি। এ দিন সকালে অভিযোগ পাওয়ার পরে দুপুরে রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের এক হোটেল থেকে মহম্মদ আনোয়ার নামে ওই পরিচিত যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। খোঁজ চলছে ট্যাক্সিচালক ও অন্য যুবকের।
কী ঘটেছিল ওই রাতে?
রিপন স্ট্রিটের ফুটপাথে বেশ কয়েক বছর ধরেই মায়ের সঙ্গে থাকে ওই কিশোরী। ওই রাস্তায় কাজ হচ্ছে। তাই প্রতি রাতে মেয়েটি স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় ঘুমোতে যেত। ওই দিন সে কলিন লেনে তার এক দিদির বাড়িতে গিয়েছিল। রাত ১১টা নাগাদ সেখান থেকে বেরিয়ে একাই হেঁটে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় ফিরছিল সে। ওই কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, ৩৮ নম্বর রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের একটি হোটেলের কর্মী মহম্মদ আনোয়ারের সঙ্গে তার দেখা হয়। অভিযোগ, ওই যুবক তাকে কিছু খাবার খেতে দেয়। তার পরেই একটি ট্যাক্সি ডেকে ওই কিশোরীকে এক প্রকার জোর করে তাতে তুলে দেয়। সে নিজেও উঠে পড়ে ওই ট্যাক্সিতে। ওই সময়ে ট্যাক্সির ভিতরে চালক ছাড়াও অন্য এক যুবক বসেছিল বলে জানায় মেয়েটি। অভিযোগ, চলন্ত ট্যাক্সির মধ্যেই প্রথমে আনোয়ার ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে ট্যাক্সিচালক ও অন্য যুবকও তাকে ধর্ষণ করে। সোমবার ভোরে ৭২ নম্বর রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে ওই কিশোরীকে নামিয়ে দেয় আনোয়ারেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, ভোর চারটে নাগাদ মেয়েকে ফিরে আসতে দেখে চমকে ওঠেন তার মা। এত ভোরে সে কী করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে চলে এল, তা জানতে চান তিনি। কিন্তু প্রথমে ওই কিশোরী কোনও উত্তর দিতে চায়নি। এর পরে তাকে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় নিয়ে যান তার মা। সেখানকার কর্মীদের কাছেও মুখ খুলতে চায়নি ওই কিশোরী। পরে অবশ্য সে তার মাকে রবিবার রাতের সমস্ত ঘটনা খুলে বলে। এর পরেই তার মা পার্ক স্ট্রিট থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাটির তদন্তে নেমে ওই বিকেলেই গ্রেফতার করে আনোয়ারকে। লালবাজারে পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “অভিযোগ পেয়েই এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।” অভিযোগ পাওয়ার পরেই মেয়েটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। |