তাঁর উদ্যোগে ইতিমধ্যেই বড়দিনের আগে সেজেছে শহর। পার্ক স্ট্রিট থেকে প্রিন্সেপ ঘাট, চৌরঙ্গী থেকে স্ট্র্যান্ড রোড— আলোয় ঝলমলে কলকাতা। চলছে নানা উৎসবও। সেই উৎসবের আমেজ দেখতেই সোমবার সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে বাড়ি ফেরার আগে শহর ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘুরে দেখলেন স্ট্র্যান্ড রোড থেকে প্রিন্সেপ ঘাট, পার্ক স্ট্রিট, চৌরঙ্গী। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে ফেরার পথে শুধু ঘুরে দেখাই নয়, কয়েকটি ছোটখাটো অসঙ্গতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে সোজা স্ট্র্যান্ড রোড ধরে মমতা চলে আসেন প্রিন্সেপ মেমোরিয়ালে। আলো-ঝলমলে প্রিন্সেপ মেমোরিয়ালে চলছে পৌষ উৎসব। হঠাৎ করে সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন উৎসবে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষ। ভিড় জমে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ কাটিয়ে ফের স্ট্র্যান্ড রোড ধরে এগোতে এগোতেই মুখ্যমন্ত্রীর চোখ আটকে যায় রাস্তার ধারে রেলিংয়ে। রেলিং-এর নীচে বিবর্ণ ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন, এত সুন্দর এই জায়গায় রেলিং কেন এমন বিবর্ণ হবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জায়গাটি রেল দফতরের। তাই রেলিং সৌর্ন্দযায়নের দায়িত্ব তাদেরই। তৎক্ষণাৎ সঙ্গে থাকা নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, রেল দফতর কাজে দেরি করলে রাজ্য সরকারই যেন রেলিংয়ের সৌর্ন্দযায়নের কাজ দ্রুত করে ফেলে। এ দিন সকালেও নবান্ন যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রীর চোখে পড়েছিল, আলিপুর রোডের রেলিংয়ের কিছু অংশ বিবর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেই রেলিং বদলাতেও মমতা ফিরহাদকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
স্ট্র্যান্ড রোডের গঙ্গাতীর থেকে মুখ্যমন্ত্রী এর পরে সোজা চলে যান পার্ক স্ট্রিট। বড়দিনের আগে যথারীতি সেজে উঠেছে ‘ফুড স্ট্রিট’। চলছে নানা ধরনের উৎসব। ফুটপাথের বিভিন্ন স্টলে জমিয়ে চলছে বিকিকিনি। তার মধ্যেই অবশ্য ছন্দপতন চোখ এড়ায়নি মমতার। চৌরঙ্গী ও পার্ক স্ট্রিটের সংযোগস্থলে এক কোনায় ফুটপাথের উপরে রীতিমতো মঞ্চ বেঁধে সভা চলছিল এক হকার ইউনিয়নের। মাইকে জোরগলায় দাবিদাওয়ার কথা জানাচ্ছিলেন এক নেতা। ফুটপাথ জুড়ে ওই সভার জন্য পথচারীদের হাঁটাচলাতেও বিঘ্ন ঘটছিল। এই দৃশ্য দেখে রীতিমতো বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। উৎসবের মরসুমে ফুটপাথ ও রাস্তার কিছু অংশ দখল করে কার অনুমতিতে এই সভা হচ্ছে, জানতে চেয়ে ফোন করেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে। ফোনেই কমিশনারকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। পার্ক স্ট্রিট চত্বর থেকে চৌরঙ্গী ঘোরার সময় তাঁর নজরে আসে আশপাশ আলোয় ঝলমল করলেও পুলিশ মেমোরিয়ালে আলো নেই। কেন ওই মেমোরিয়ালে আলো লাগানো হয়নি, তা জানতে চেয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীর ফোন যায় পুলিশ কমিশনারের কাছে। দেওয়া হয় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও।
|