সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতোই এ বার প্রকাশ্যে আত্মসমালোচনার পথে হাঁটতে হল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বকে। বার বার সবিস্তার আলোচনার পরেও দলে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব, বিশৃঙ্খলা রয়েছে বলে কবুল করে নিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। ঘটনাচক্রে, সেই দিনেই কলকাতা বন্দর এলাকার নেতা মহম্মদ সাদিকের নেতৃত্বে ফব-র শ’দেড়েক তরুণ কর্মী-সমর্থক যোগ দিলেন কংগ্রেসে। রাজ্য জুড়ে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িকের সময় উল্টো ঘটনা ঘটল ফব-কে কেন্দ্র করে।
দলত্যাগী নেতা সরল দেবকে ফেরানোর সম্ভাবনা, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিবাদ এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য দলের জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন গড়েছে ফব। এই প্রথম ফব-য় যে কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে এমন কমিশন গড়তে হল, তা স্বীকার করা হচ্ছে দলের তরফেই। সেই কথা বলতে গিয়েই সোমবার দেবব্রতবাবু আক্ষেপ করে বলেন, “দলের প্রত্যেক সদস্যকে গঠনতন্ত্র মেনে চলতে হবে। উপদলীয় কাজ, বা কোনও রকম ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ চলবে না। পার্টি কংগ্রেসের সাংগঠনিক রিপোর্টে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, তার পরেও এটা চলছে।”
সরলবাবু ফের দলে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বলে এ দিন দেবব্রতবাবু দাবি করেন। কেন তিনি সদস্যপদ নবীকরণ করাতে পারেননি, গঠনতন্ত্র সব ক্ষেত্রে মানা হয়েছিল কি না, সে সবই কমিশন খতিয়ে দেখবে বলে সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য। এই প্রসঙ্গে কমিশন কথা বলবে দলের প্রবীণতম নেতা অশোক ঘোষের সঙ্গেও। তবে দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্যে যে ভাবে সরলবাবুর প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে, তার বিরুদ্ধে আগামী রাজ্য কমিটির বৈঠকে সরব হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলেরই একাংশ। আর এরই মধ্যে ফ ব-র অস্বস্তি বাড়িয়ে মইনুদ্দিন শামসদের তৃণমূলে যাওয়ার পরে বন্দর এলাকার আরও কিছু কর্মী-সমর্থক নাম লিখিয়েছেন কংগ্রেসে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, “যাঁরা কংগ্রেস ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের বয়স ৫০-এর উপরে। আর ফব-র যে কর্মীরা যোগ দিলেন, প্রত্যেকেরই বয়স ৪৫-এর নীচে। এই তরুণেরা যোগ দেওয়ায় প্রমাণিত, কংগ্রেসের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে!”
|
