লড়াইটা ছিল গোপীচন্দের দুই ছাত্রীর। লড়াইটা ছিল বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের উদীয়মান এক তারকার সঙ্গে সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া এক বাঙালি কন্যার। যে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কোনও অঘটন ঘটল না। যে লড়াইয়ে শেষ হাসিটা হাসলেন পিভি সিন্ধুই। তবে সব থেকে চওড়া হাসিটা সম্ভবত হাসলেন গোপীচন্দ। তাঁর দুই ছাত্রীই যে জিতে গেলেন এ দিন।
সিন্ধু হেভিওয়েট প্রতিপক্ষ হলেও হলদিয়ার মেয়ে ঋতুপর্ণা দাস কিন্তু ইদানীং ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তাই এই লড়াইটা নিয়ে আগ্রহ জন্মেছিল। সোমবার লড়াই করেও জোড়া খেতাব জেতা হল না হলদিয়ার ঋতুপর্ণার।
চণ্ডীগড়ে জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন মাসখানেক আগে। মধুমিতা সিংহ বিস্তের পর দীর্ঘ দিন বাদে বাংলার একটি মেয়ের সামনে এসেছিল সিনিয়র জাতীয় খেতাব জয়ের সুযোগ। কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জজয়ী সিন্ধুর কাছে ১১-২১, ১৭-২১ হারলেন বছর ষোলোর ঋতুপর্ণা।
সোমবার সিন্ধুর বিরুদ্ধে খেলতে নেমে প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। নয়াদিল্লিতে তাঁকে ফোনে ধরা হলে স্বীকারও করলেন সে কথা। গোপীর অ্যাকাডেমির ছাত্রী বললেন, “সিন্ধুর মতো প্লেয়ার উল্টো দিকে ছিল। একটু চাপ তো ছিলই। সে জন্য প্রথম সেটটা খারাপ খেলেছি। দ্বিতীয় সেটে লড়াই করেছিলাম। কিন্তু পারলাম না।” তবে সিন্ধুর সঙ্গে খেলার এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে তাঁকে সাহায্য করবে বলেই মনে করেন ঋতুপর্ণা। বলেও দিলেন, “সিন্ধু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পেয়েছে। ওর সঙ্গে ম্যাচটা সহজ হবে না জানতাম। এই হার থেকে আমি কিন্তু অনেক শিক্ষা নিয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা দ্বিতীয় সেটে আমি যে ভাবে লড়াই করেছি, তাতে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।”
রবিবার সেমিফাইনালে সপ্তম বাছাই সায়ালি গোখলেকে হারিয়ে সবার নজর কাড়েন বাংলার মেয়ে। যদিও এই টুর্নামেন্টে ঋতুপর্ণা অংশ নিয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে। ফাইনালে অবশ্য ব্যাডমিন্টনের নতুন তারকা সিন্ধুই ফেভারিট হিসেবে শুরু করেছিলেন। জিততে না পারলেও নিজের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ঋতুপর্ণা। হাসতে হাসতে বললেন, “আমার তো সবে শুরু। সিন্ধু অনেক এগিয়ে আছে। একদিন হয়তো আমিও ওঁকে ছুঁয়ে ফেলব।”
এপ্রিলে বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে। তার আগে জানুয়ারিতেই সিনিয়র র্যাঙ্কিং টুর্নামেন্ট খেলবেন ঋতুপর্ণা। ক্রিসমাসে তারই প্রস্তুতি নেবেন তিনি। “পরের টুর্নামেন্টগুলোয় ভাল ফল করাই আমার লক্ষ্য। এ বার আর হারতে চাই না।”
|