মহমেডান থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর ভারতের কোনও আই লিগের ক্লাবে টোলগে ওজবের খেলার সম্ভাবনা ক্রমশই কমছে। অনেক চেষ্টা করেও আই লিগের কোনও ক্লাবকে এখনও রাজি করাতে পারেননি তিনি।
কলকাতার তিন প্রধানে জায়গা হবে না বুঝে গিয়ে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ডেম্পো তাঁকে চাইছে। মহমেডান ছেড়ে দিলে আই লিগের সেকেন্ড উইন্ডোতে তিনি গোয়ায় চলে যাবেন জানিয়েছিলেন কর্তাদের। কিন্তু সোমবার রাতে গোয়া থেকে ফোনে ডেম্পো কোচ মরিসিও আলফান্সো পরিষ্কার বলে দিলেন, “আমরা র্যান্টি মার্টিন্সকে নেওয়ার ব্য্যাপারে আগ্রহী। তার সঙ্গে কথাবার্তাও চলছে। কিন্তু টোলগেকে নেওয়ার কথা ভাবছি না। ডেম্পোর তরফে কেউ ওর সঙ্গে কথাও বলেনি।” গোয়ার খবর, ডেম্পোর প্রস্তাব পাওয়ার পরই রবিবার ইউনাইটেড কর্তাদের এসএমএস করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন র্যান্টি।
বিশৃঙ্খল আচরণ এবং খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য টোলগেকে শো-কজ করেছিল মহমেডান। জবাবও দিয়েছিলেন টোলগে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি সাদা-কালো কর্তারা। প্র্যাকটিসে অনিয়মিত হাজিরা, ড্রেসিংরুমে কর্তাদের দিকে তেড়ে যাওয়া, প্রতিদিন কোচের সঙ্গে ঝগড়া করে সমস্যা তৈরি করা টোলগেকে রাখতে রাজি ছিলেন না তাঁরা। ক্লাবের পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত টোলগেকে শনিবার জানিয়ে দেওয়া হয়, আপনাকে আর দরকার নেই। তারপর বারবার কর্তাদের ফোন করলেও টোলগের ফোন ধরেননি কোনও মহমেডান কর্তারা। টোলগে অবশ্য বান্ধবী নিয়ে ক্লাবের দেওয়া ফ্ল্যাটে এখনও রয়েছেন। মাঠ সচিব কামারুদ্দিন বললেন, “আমি ওকে সই করালাম। আর ড্রেসিংরুমে এসে আমাকেই গালাগালি করছে। টাকা নেবে, অনুশীলনে আসবে না এটা হয় না কি? খেলার ব্যাপারে সিরিয়াস নয়। গোল করতে পারবে না। ওকে রাখব কেন? ওর সঙ্গে কথা বলার প্রশ্নই নেই। ফ্ল্যাট আটকে রাখলে ওর মাইনে থেকে কেটে নেব জানিয়ে দিয়েছি।” |
শুধু মহমেডান নয়, কলকাতার যে দুই ক্লাবে টোলগে খেলেছেন সেই ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান কর্তারাও অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের উপর চূড়ান্ত বিরক্ত। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “আমাদের টিমে এখন নতুন বিদেশির জায়গা নেই। থাকলেও টোলগেকে নিতাম না।” দেবব্রতবাবু দীর্ঘ দিন লাল-হলুদ টিম তৈরির প্রধান কারিগর। স্বাভাবিক কারণেই তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি। তবে টোলগে যেভাবে কলকাতা লিগ জেতার আনন্দের মুহূর্তে লাল-হলুদ জনতাকে দুঃখ দিয়ে মোহনবাগান শিবিরে গিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন, সেই ঘটনাকে এখনও ‘বেইমানি’ বলে মনে করেন সবাই। কিন্তু সবুজ-মেরুনেও তো টিঁকতে পারেননি টোলগে! চোট দেখিয়ে দিনের পর দিন বসে থেকেছেন। গোপনে হাঁটুর অস্ত্রোপচার করতে দেশে চলে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার। নিজের দেশের ফুটবল ফেডারেশন, বাবাকে দিয়ে ফোন করে নানা আইনি ঝামেলা পাকিয়েছিলেন বাগানের বিরুদ্ধে, সব কথা এখনও মনে আছে কর্তাদের। মোহন-সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “ও খেলার চেয়ে আইন নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে।” আর ইউনাইটেড কর্তা নবাব ভট্টাচার্য বললেন, “টোলগের মতো অপেশাদার ফুটবলার নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”
র্যান্টি গোয়ায় যাওয়ার জন্য তৈরি। ডেম্পোও তাঁকে প্রবলভাবেই চাইছে। ইউনাইটেড কর্তারা ঠিক করেছেন র্যান্টিকে যদি ছাড়তেই হয়, তা হলে তাঁদের ট্রান্সফার ফি দিতে হবে। তবে র্যান্টিকে ধরে রাখার জন্য আজ শেষ বার চেষ্টা করবেন ইউনাইটেড কর্তারা। কিন্তু টোলগের কী হবে? শেষ পর্যন্ত কি ক্লাব না পেয়ে ফিরে যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়? কী ভাবছেন তিনি? বারবার ফোন করেও টোলগেকে ধরা যায়নি। ফোন বেজেই গিয়েছে।
|