ব্ল্যাক ক্যাট বা কমব্যাট ফোর্সের ধাঁচের পোশাক আর চলবে না। এ বার থেকে নিরাপত্তারক্ষীদের মতো সাধারণ উর্দি পরেই কাজ করতে হবে বাউন্সারদের। কোন বাউন্সার কোন এলাকায় কাজ করছেন, স্থানীয় থানায় তা-ও জানাতে হবে। জমা দিতে হবে বাউন্সারদের সচিত্র পরিচয়পত্রও।
লালবাজার সূত্রের খবর, নভেম্বরে শর্ট স্ট্রিটের বিতর্কিত জমি-বাড়ি দখলের হামলায় গুলি চললে দু’জন বাউন্সার মারা যান। তার পরে দমদমের পানশালায় এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুতেও আঙুল উঠছে বাউন্সারদের দিকে। বাউন্সারদের নিয়ে পরের পর এমন ঘটনায় পুলিশকর্তারা চিন্তিত। তাই বাউন্সারদের নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর হয়েছে লালবাজার। সেই জন্যই ২০০৫ সালে কেন্দ্রের তৈরি ‘প্রাইভেট সিকিওরিটি এজেন্সি রেগুলেশন অ্যাক্ট’ কঠোর ভাবে মেনে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের অধীনে থাকা ২১৫টি বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থাকে।
রক্ষী জোগানোর ওই সব সংস্থাকে কী কী নিয়ম মানতে হবে?
লালবাজারের খবর, আপাতত কয়েকটি বিধির ব্যবস্থা হয়েছে। তার মধ্যে আছে: · নিরাপত্তারক্ষী বা বাউন্সারকে নিজেদের সংস্থার পরিচয় লেখা উর্দি পরতে হবে। · স্থানীয় থানায় জমা দিতে হবে ওই এলাকায় কর্মরত নিরাপত্তারক্ষী এবং বাউন্সারদের সচিত্র পরিচয়পত্র। · জোর করে কোনও সম্পত্তি দখল বা হুমকি দেওয়ার মতো কোনও কাজে বাউন্সারদের ব্যবহার করা যাবে না। · প্রত্যেক নিরাপত্তারক্ষীর জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করতে হবে। ওই সব সংস্থাতেই প্রশিক্ষণের পরিকাঠামো থাকা চাই।
পুলিশ জানায়, কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) ইতিমধ্যেই বিভিন্ন নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে ছিলেন স্থানীয় থানার আধিকারিকেরাও। ওই বৈঠকে পুলিশকর্তারা নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেন, নিয়ম না-মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংস্থার বিরুদ্ধে।
শর্ট স্ট্রিটের হামলায় ধৃত বাউন্সারদের জেরা করে জানা গিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে থাকা তিন জন মহিলার মধ্যে দু’জনের বয়স ১৮-র নীচে। লালবাজারের কর্তারা জানান, ১৮ বছরের কম বয়সের কাউকেই আর নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না। থানায় সচিত্র পরিচয়পত্র দিলেই বাউন্সারদের বয়স জানা যাবে।
পুলিশি সূত্রের খবর, ৯এ শর্ট স্ট্রিটের জমি দখলের জন্য বেসরকারি নিরাপত্তাপক্ষী দিয়ে সম্পত্তির কারবারিরা একাধিক বার হামলা চালিয়েছিল। ১১ নভেম্বরের আগে ১৫ সেপ্টেম্বরও বাড়ি-জমির কারবারিদের নির্দেশে বেসরকারি রক্ষী সংস্থার কর্মীরা সেখানকার বাসিন্দা রতনলাল নাহাটাকে মারধর করে তাঁর বন্দুক লুঠ করে। নভেম্বরে হামলা নিয়ে অভিযোগ ওঠে ‘অ্যাক্টিভ গ্রুপ’ সংস্থা নামে একটি বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থার বিরুদ্ধে। ওই সংস্থার মালিক অরূপ দেবনাথকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই সংস্থাটির কোনও লাইসেন্সই ছিল না। |