মিড অফ থেকে অজিঙ্ক রাহানের ডিরেক্ট থ্রো। আর তাতেই ফাফ দু’প্লেসি রান আউট। এই জায়গাটা থেকেই ম্যাচটা ঘুরে ভারতের দিকে চলে আসতে পারত। তেমন পরিস্থিতিও ছিল। কিন্তু রবিবার ওয়ান্ডারার্সে শেষ চার ওভারে যে ক্রিকেটটা হল, তাতে জেতার কোনও তাগিদ বা চেষ্টা দুটো দলের মধ্যেই ছিল না। দুটো দলই ওই সময় ‘আগে বাঁচো’ নীতি নিয়েছিল। ফলে উত্তেজক ম্যাচটা ড্র হয়ে গেল শেষ পর্যন্ত।
টিভি-তে দেখছিলাম, শেষ দিকে স্টেইন-ফিলান্ডারদের ডিফেন্সিভ ব্যাটিং দেখে বিরক্ত হয়ে উঠছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকেরা। এত কাছে এসেও টেস্টটা জেতা যাবে না, এটা বোধহয় ওদের মানতে কষ্ট হচ্ছিল। আর আমাদেরও মানতে কষ্ট হচ্ছিল, এই টেস্ট হারতে পারে ধোনিরা। |
|
|
দু’প্লেসির সেঞ্চুরিতে আশায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রাহানের থ্রোয়ে পাল্টে গেল ম্যাচের রং। |
|
সত্যি বলতে কী, চতুর্থ দিনের শেষেও আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম, ম্যাচটা ভারত জিতবে। বল পুরনো হচ্ছে। জাহির-শামিরা রিভার্স সুইং করাচ্ছে। তার উপর অশ্বিন আছে। পঞ্চম দিনের উইকেট যতই ভাল থাকুক, স্পিনাররা একটু তো সাহায্য পাবে।
কিন্তু রবিবার ম্যাচ যত এগোচ্ছিল, তত সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে চলে যাচ্ছিল। এর জন্য অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে দু’প্লেসি এবং ডে’ভিলিয়ার্সকে। বিশেষ করে দু’প্লেসি। আঙুলে চোট লেগেছিল। এও শুনলাম, পেন কিলার ট্যাবলেট খেয়ে ব্যাট করেছে ছেলেটা। দু’প্লেসির কিন্তু এ রকম খেলা আগেও খেলেছে। গত বছর অ্যাডিলেডে এ রকম ম্যারাথন ইনিংস খেলে হার বাঁচিয়েছিল। এখানে তো ম্যাচটা প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিল। ডে’ভিলিয়ার্সও দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করল। কিন্তু দু’প্লেসি রান আউট না হলে ধোনিদের কপালে দুঃখ ছিল।
|
নাটকীয় ওয়ান্ডারার্স। শামির শিকার পিটারসেন। |
ভারতীয় পেসারদের আমি দোষ দিতে চাই না। শামি-ইশান্ত-জাহির যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। কিন্তু অশ্বিনের থেকে শেষ দিনে আমি ভাল পারফরম্যান্স আশা করেছিলাম। ভারতের এক নম্বর স্পিনার তুমি। আর শেষ দিনের পিচে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বল করে একটাও উইকেট পেলে না? অশ্বিনকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বল দিয়ে একটা চেষ্টা করেছিল ধোনি। কিন্তু বোলার যদি কোনও রকম চাপ তৈরি করতে না পারে, অধিনায়ক কী করবে? ৩৬ ওভার বল করে উইকেট শূন্য থাকল অশ্বিন। ধোনির আক্রমণের অন্যতম অস্ত্রটাই ভোঁতা হয়ে গেল।
শামি তো শুরুতেই পিটারসেনকে ফিরিয়েছিল। জাহিরও লাঞ্চের আগে কালিসকে আউট করে দিল। লাঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার চার উইকেট পড়ে গিয়েছে। আর একটা উইকেট পড়লেই টেস্টটা ধোনির পকেটে চলে আসত। কিন্তু সেই উইকেটটাই ঠিক সময় নেওয়া গেল না। দু’প্লেসি- ডে’ভিলিয়ার্স মিলে ২০৫ রান যোগ করে দিয়ে ম্যাচটা ভারতের হাত থেকে নিয়ে গেল। |
টেস্টে সব থেকে
কম ব্যবধানে ড্র |
• ১ রান, ইংল্যান্ড-জিম্বাবোয়ে (১৯৯৬)
• ১ রান, ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২০১১)
• ৬ রান, ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯৪৮)
• ৬ রান, ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯৬৩)
• ৮ রান, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড (১৯৭৪)
• ৮ রান, দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত (২০১৩)
• দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৫০-৭ টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা চতুর্থ ইনিংস স্কোর।
• সেরার রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ১৯৩৯-এ ডারবানের ‘টাইমলেস টেস্ট’-এ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড তুলেছিল ৬৫৪-৫। |
|