বৈঠকের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই মিলল জামিন।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কলকাতায় এসে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের বৈঠক করে যাওয়ার পরের দিন, শনিবার জামিনে মুক্তি পেলেন গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ জিটিএ সদস্য বিনয় তামাঙ্গ।
এ দিন দার্জিলিং জেলা আদালতে ২০১০ সালে গোর্খা লিগ নেতা মদন তামাঙ্গের নিরাপত্তা রক্ষীর উপরে হামলার অভিযোগের মামলার শুনানি ছিল। ওই শুনানিতেই দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (দ্বিতীয় কোর্ট) শান্তনু মিশ্র অভিযুক্ত বিনয় তামাঙ্গের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
রাতেই দার্জিলিং সংশোধানাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বিনয়কে। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আদালত থেকে নথি পৌঁছনোর পরে তাঁকে ছাড়া হয় বলে দার্জিলিঙের জেল সুপার পিটি ভুটিয়া জানান। গত ২১ অগস্ট পুরোনো কয়েকটি মামলায় বিনয় তামাঙ্গকে গ্রেফতারের পরে, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার আরও ১৮টি মামলায় বিনয় তামাঙ্গকে অভিযুক্ত করা হয়। ইতিমধ্যেই ১৭টি মামলায় দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলা আদালত থেকে জামিন পেয়ে ছিলেন তামাঙ্গ। এ দিন শেষ মামলাতেও জামিন পাওয়ায় গ্রেফতারের ঠিক চার মাসের মাথায় মুক্তি পেলেন তিনি।
কলকাতায় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে জিটিএ-র প্রধানের পদে ফেরার কথা যেমন গুরুঙ্গ বলেছিলেন, তেমনই দলের জেলবন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি নিয়েও বলেছিলেন, “সব মিটমাট হয়ে গিয়েছে।” আগামী দু’চার দিনের মধ্যেই দলের নেতা-কর্মীরা মুক্তি পেতে পারেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন। ঘটনা হল, ওই বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মোর্চার অন্দরে গুরুঙ্গের ‘ডান-হাত’ বলে পরিচিত জিটিএর এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য বিনয় তামাঙ্গ মুক্তি পেলেন। প্রসঙ্গত জিটিএ-র চিফ থেকে গুরুঙ্গ ইস্তফা দেওয়ার পরে বিনয় তামাঙ্গকেই চিফ পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোর্চা প্রধান। যদিও বিনয় বন্দি থাকায় তা আর সম্ভব হয়নি। তবে, এখনও সাত জন জিটিএ সদস্য-সহ ২০ জন মোর্চা নেতা-সমর্থক বন্দি রয়েছেন বলে মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির মন্তব্য, “মোর্চার অন্য নেতা-কর্মীরাও দ্রুত মুক্তি পাবেন বলে আশা করছি।”
মুখ্যমন্ত্রী-গুরুঙ্গ বৈঠকের পরে তামাঙ্গের জামিন পাওয়ার এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে রাজনৈতিক ভাবে বলতে পারি মোর্চা আসলে তৃণমূলের পরিবারেরই সদস্য। ২০০৭ সাল থেকেই বারবার এটা প্রমাণিত হয়েছে।” যা শুনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলছেন, “যাঁরা এ ধরনের মন্তব্য করেছেন তাঁরা আইনের পরিপন্থী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি পরে দার্জিলিঙে যে ধরপাকড় চলছিল, সে সময়ে অশোকবাবুরাই সকলকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।” |