|
|
|
|
কংগ্রেসের হাত ধরারই ইঙ্গিত দিচ্ছেন অরবিন্দ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২০ ডিসেম্বর |
আম-জনতার ভোটেই তাদের অভূতপূর্ব উত্থান। আর সেই আম জনতার চাপেই এখন ভোটের আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ার পথে আম আদমি পার্টি (আপ)।
কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে দল সরকার গড়বে কি না, তা স্থির করতে সোমবার পর্যন্ত দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং-এর কাছে সময় চেয়ে রেখেছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, ওই সময়ের মধ্যে চিঠি, এসএমএস-এর মাধ্যমে দিল্লির মানুষের থেকে সরকার গড়া নিয়ে রায় নেবেন তাঁরা। সেই সময়সীমা শেষ হতে বাকি দু’দিন। কিন্তু ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে যে, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ার জন্য আপ-এর উপরে চাপ বাড়ছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালও তা স্বীকার করে বলেছেন, “গণভোটের রায় না এলেও দল কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই সরকার গড়তে চলেছে।”
দিল্লিতে সরকার গড়ার জন্য সময় চাওয়ার পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ‘পালিয়ে যাওয়া’র অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস ও বিজেপি। কংগ্রেস নিঃশর্ত সমর্থন দেওয়ার কথা বললেও অরবিন্দ কেন সরকার গড়ছেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেজরিওয়াল ভাল করেই জানেন, এখনও যদি তিনি সরকার না গড়েন, তা হলে আগামী দিনে অনেক প্রশ্নের মুখে তাঁকে পড়তে হবে। যা আখেরে ক্ষতি করবে দলেরই। এই পরিস্থিতিতে কারও সাহায্য নিয়ে সরকার গড়বেন না, এই অবস্থান ছাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন কেজরিওয়াল। যে কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে রাজনীতিতে তাঁর উত্থান, এখন বাধ্য হয়ে তাদেরই হাত ধরার কথা ভাবতে হচ্ছে অরবিন্দকে! গত কয়েক দিনের মতো আজও সরকার গড়া নিয়ে কেজরিওয়ালের উপর চাপ বাড়িয়েছে কংগ্রেস। দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অরবিন্দ সিংহ লাভলি বলেন, “কেজরিওয়াল মানুষের সমস্যা সমাধানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করুন। আমাদের নিঃশর্ত সমর্থন রয়েছে।”
অরবিন্দ অবশ্য জানেন, মুখে নিঃশর্ত সমর্থনের কথা বললেও সরকার গঠনের পর আপ-কে বিব্রত করতে পিছপা হবে না কংগ্রেস। তাই দলের পরিকল্পনা, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগে সরকার গড়া হোক। তার পরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনে যেমন জনমুখী প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে, তেমনই শীলা দীক্ষিত সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তও শুরু করা হবে। তাতে একদিকে যেমন প্রতিশ্রুতি পালনের বার্তা দেওয়া হবে, তেমনই কংগ্রেস তখন সমর্থন তুলে নিলে রাজনৈতিক ভাবে শহিদের মর্যাদা পাবে দল। সে ক্ষেত্রে বিধানসভা ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনে চলে যেতে পারবেন কেজরিওয়াল। আপ-নেতৃত্বের অঙ্ক, কংগ্রেস সেই ঝুঁকি এখনই নিতে চাইবে না। আপ নেতৃত্ব এ-ও বুঝতে পারছেন, কংগ্রেস এখনই দিল্লিতে ফের ভোট চাইছে না। কংগ্রেসের অন্দরেই আশঙ্কা রয়েছে, নতুন করে ভোট হলে জেতা আটটি আসনও ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
আপ-শিবিরের এই অবস্থা দেখে কংগ্রেস, বিজেপি দু’পক্ষই মনে করছে, জল মাপতে গিয়েই বিপদে পড়েছেন কেজরিওয়াল। কারণ এখনও পর্যন্ত প্রায় ছ’লক্ষ চিঠির উত্তর এসেছে, যার অধিকাংশই চায় দিল্লিতে সরকার গড়ুক আপ। আগামী দিনে ওই জনমতকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয় আপ-র পক্ষে। কেন না, নির্বাচনের আগে দিল্লিবাসীকে তিনি যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, মানুষ চায় তা পূরণ হোক। কেজরিওয়াল তা জানেন। তাই তিনি বলেছেন, “মানুষ চান আমরা প্রতিশ্রুতি পালন করি।”
এক দিকে মানুষের চোখে সুশাসনের স্বপ্ন অন্য দিকে নতুন করে নির্বাচন না চাওয়া দিল্লিবাসীর এই মনোভাব বুঝতে পারছেন আপ-এর বিধায়কেরাও। |
পুরনো খবর: ঘরে-বাইরে চাপ, সরকার গড়ার চিন্তা আপের
|
|
|
|
|
|