|
|
|
|
ঘরে-বাইরে চাপ, সরকার গড়ার চিন্তা আপের
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১৯ ডিসেম্বর |
দিল্লিতে সরকার গড়া নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আগের অনড় অবস্থান বদলে সরকার গড়ার কথাও ভাবছেন আম-আদমি পার্টির (আপ) নেতা।
ইতিমধ্যেই তিনি দিল্লিবাসীর রায় জানতে চেয়ে পরিস্থিতির জল মাপতে চেয়েছেন। কিন্তু এক দিকে বিজেপির ময়দান থেকে সরে যাওয়া ও কংগ্রেসের আপকে নিঃশর্ত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি চাপে ফেলেছে কেজরিওয়ালকে। ‘গুরু’ অণ্ণা হজারে এক ঘরে করে দেওয়াতে আরও বিপাকে পড়েছেন তিনি। জনতার রায়ও সরকার গড়ার পক্ষে। আজ এবিপি নিউজের পক্ষ থেকে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রায় আশি শতাংশ মানুষ চান দিল্লিতে সরকার গড়ুক আম আদমি পার্টি (আপ)। ৬৪ শতাংশ মানুষ চান না দিল্লিতে ফের নির্বাচন হোক। রাজ্যের মানুষ যে ফের নির্বাচনের পক্ষপাতী নয় তা বুঝতে পারছেন আপ নেতৃত্বও।
আপের টিকিটে জিতে আসা বিধায়কদের সিংহভাগই মনে করেন ফের ভোট হলে এক তো অর্থ খরচ তার উপর আসন খোয়াবারও আশঙ্কা রয়েছে। কারণ লোকসভা ভোটের কাছাকাছি সময়ে ফের ভোট হলে স্থানীয় সমস্যার পরিবর্তে জাতীয় বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। যেখানে নরেন্দ্র মোদী ফ্যাক্টরও কাজ করবে। ফলে আপের ফল ভাল নাও হতে পারে। সমীক্ষা বলছে, ফের ভোট হলে প্রায় ১০ শতাংশ ভোট কম পাবে আপ। যা দলের বিধায়কদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কেজরিওয়ালদের আশঙ্কা, দিল্লিতে জিতে আসা আসন ধরে রাখা কঠিন হলে দেশের অন্য শহরে নজর দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ফলে পরে আপকে খেসারত দিতে হতে পারে। আবার সরকার না গড়ে কেজরিওয়াল পালিয়ে যাচ্ছেন বলেও প্রচার শুরু করেছে কংগ্রেস-বিজেপি। তাই অবস্থান বদলের কথা ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন কেজরিওয়াল। আপ সূত্রে খবর, সরকার গঠন নিয়ে দল পঁচিশ লক্ষ দিল্লিবাসীর রায় নেওয়ার কথা বলেছিল ঠিকই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত লাখ তিনেকের মতো চিঠির সাড়া মিলেছে।
অনেকের মতে, জনতার রায় নেওয়ার অছিলায় কেজরিওয়াল কিছু সময় নিতে চাইছেন। তবে আপের পাল্টা দাবি, কেজরিওয়ালরা যাতে সরকার গড়তে বাধ্য হন সে জন্য ক্রমাগত সুকৌশলে চাপ দিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস ও বিজেপি। আপকে চাপ দেওয়ার বিষয়ে ওই দুই দল হাত মিলিয়েছে। তা না হলে দিল্লিতে এত দিনে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হত। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দে বলেন, “আমরা লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছে জানতে চেয়েছি আপ সরকার গড়তে আর ক’দিন সময় নেবে?”
লোকসভা নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখেই জোড়াতালি দিয়ে কিংবা বিধায়ক কেনা-বেচা করে বিজেপির সরকার গড়া উচিত হবে না তা দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পরেই আপকে সমর্থনের কথা জানায় কংগ্রেস। একই সঙ্গে গত কয়েক দিনে লোকপালকে কেন্দ্র করে রাহুল গাঁধী থেকে অরুণ জেটলি-অণ্ণা হজারের সমর্থন আদায় করে নিতে পেরেছেন। কেন্দ্রের আনা লোকপাল বিলকে সমর্থন করেছেন অণ্ণা। ওই বিল সমর্থন করেননি কেজরিওয়াল-সহ আপ নেতৃত্ব। কিন্তু অণ্ণার সম্মতি পাওয়ার পরেই সংসদে পাশ হয়ে যায় লোকপাল বিল। লোকপাল আন্দোলন ও অণ্ণা হজারের হাত ধরেই কেজরিওয়ালের উত্থান। সেই বিষয়েই কার্যত এক ঘরে হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েন তিনি। কেজরিওয়ালের দাবি, “আমার সঙ্গে অণ্ণার বিবাদ বাধানোর জন্য সব দল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে।”
কেজরিওয়ালদের দাবি, কংগ্রেস-বিজেপি দু’দলই চায় আপ দিল্লিতে সরকার গড়ুক। তাই কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে দায়িত্ব নিতে ভয় পাওয়ার প্রচার শুরু হয়েছে। আপ নেতাদের মতে, কংগ্রেস-বিজেপি মনে করে মসনদে বসে প্রতিশ্রুতি পালন করতে হিমসিম খাবেন কেজরিওয়ালরা। সে জন্যই রাজধানীতে আপের সরকার দেখতে আগ্রহী তারা।
চতুর্দিক থেকে আসা চাপ কোন কৌশলে কেজরিওয়াল সামলান তাই এখন দেখার।
|
পুরনো খবর: আম আদমিকে রুখতে লোকপালে একজোট |
|
|
|
|
|