|
|
|
|
দলে নেতা বদলের কাজ শুরু করে দিলেন রাহুল
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২০ ডিসেম্বর |
বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর দলে পরিবর্তন ঘটানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন রাহুল গাঁধী। গত কালই ছত্তীসগঢ় ও দিল্লিতে দুই তরুণ নেতা ভূপেশ বাঘেল এবং অরবিন্দ সিংহকে প্রদেশ সভাপতি পদে নিয়োগ করেছেন তিনি। রাহুল-ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, আজ-কালের মধ্যে রাজস্থান এবং হরিয়ানা প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বও দুই তরুণ নেতার হাতে দিতে পারেন তিনি। রাজস্থানে সচিন পায়লট এবং হরিয়ানায় অশোক তাঁওয়ারের প্রদেশ সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিজয় বহুগুণাকে সরিয়ে হরিশ রাওয়াতকে বসানো হতে পারে বলেও সূত্রের খবর।
প্রদেশ নেতৃত্বে এ ভাবে তরুণদের বসানো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, অরবিন্দ সিংহ ও ভূপেশ বাঘেল তরুণ হলেও দীর্ঘদিন রাজনীতি করছেন। অন্য দিকে অশোক তাঁওয়ার ও সচিন পায়লট দু’জনেরই বয়স অনেক কম। প্রথম জনের ৩৭ ও দ্বিতীয় জনের ৩৬ বছর। প্রদেশ সভাপতি হিসেবে হরিয়ানা ও রাজস্থানে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের এই দুই তরুণ কী ভাবে সামলাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, এই দুই নেতার উত্থানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। অশোককে ঠেকাতে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা সক্রিয় তো সচিনকে রুখতে তৎপর অশোক গহলৌত শিবির।
যদিও এখনও এই দু’জনকে কিন্তু এগিয়ে রেখেছেন রাহুল। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতা আজ বলেন, “বিহারে জগন্নাথ মিশ্র ৩৯ বছর বয়সে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেই সময় তিনি যদি পারেন, তা হলে এখন এঁরা পারবেন না কেন?” ওই নেতার বক্তব্য, তরুণ প্রজন্মকে ক্ষমতা দেওয়া হয় না বলেই তাঁরা কাজ করতে পারেন না। তাঁর যুক্তি, কাল দিল্লির প্রদেশ সভাপতি পদের দায়িত্ব নিয়ে আজই সক্রিয় হয়ে মাঠে নেমেছেন অরবিন্দ সিংহ।
আজ উত্তরাখণ্ডের কংগ্রেস নেতা তথা কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত দেখা করেন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। এমনিতেই উত্তরাখণ্ডের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে রাওয়াতের সম্ভাবনা নিয়ে কংগ্রেসে আলোচনা চলছিল। আজকের বৈঠকের পরে তা আরও গতি পেয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, একটি বিষয় নিয়ে এখনও ধন্ধে রাহুল। ভোট রাজনীতির অঙ্ক মেনে হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডের একটিতে ঠাকুর নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে অন্যটিকে কোনও ব্রাহ্মণ নেতাকে ওই পদের জন্য বাছা হয়। হিমাচলের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহ ঠাকুর নেতা। আবার হরিশ রাওয়াতও ঠাকুর। এই অবস্থায় উত্তরাখণ্ড কংগ্রেসের ব্রাহ্মণ নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দিরা হৃদেশের নাম আলোচনায় উঠছে।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্য স্তরের নেতৃত্বে পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় স্তরেও হাত দেবেন রাহুল। তবে এখনই বড় পরিবর্তন তিনি করবেন না। ২০১৪-এ লোকসভা ভোটের পরে পিছিয়ে পড়া ও তরুণদের বেশি ক্ষমতা দেওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। কিন্তু এখনই সে রকম পদক্ষেপ করলে ভোট ব্যবস্থাপনা ভেস্তে যেতে পারে। কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য রাহুলকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, লোকসভা ভোটে দল খারাপ ফল করলে সেই পরিবর্তন করা কঠিন। কারণ তখন রাহুলের নেতৃত্ব দুর্বল হয়ে যাবে। তখন পরিবর্তন করতে গেলে দল থেকেই বাধা আসবে।
রাহুল শিবিরের এক নেতা অবশ্য জানিয়েছেন, বাধা এলেও তখন রাহুল প্রয়োজনীয় বদল করবেনই। আপাতত ভোটের কথা ভেবে জয়রাম রমেশ, জিতেন্দ্র সিংহের মতো নেতাদের দলের দায়িত্বে আনা হবে। কিছু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভার দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব সামলাতে বলা হবে। চলতি সপ্তাহ থেকে সেই প্রক্রিয়া কিছুটা শুরুও হবে বলে খবর। মঙ্গলবার দেশের সংখ্যালঘু সমাজের ২০০ জন প্রতিনিধিকে দিল্লিতে ডেকেছেন রাহুল। সেখানে গুলাম নবি আজাদ, রহমান খান, অস্কার ফার্নান্ডেজের মতো মন্ত্রীদের সামিল হতে বলেছেন তিনি। সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে দলের লোকসভা ভোটের ইস্তেহার রচনার জন্য ওই তিন মন্ত্রী রাহুলকে ‘ইনপুট’ দেবেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। |
নেতা কোথায়, সরব অমর্ত্য |
কংগ্রেসে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হলেন অমর্ত্য সেন। শুক্রবার কলকাতায় এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই নোবলজয়ী অর্থনীতিবিদ জানান, যোগ্য নেতৃত্বের অভাব এবং মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতার জন্যই চার রাজ্যের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। তিনি বলেন, “যোগ্য নেতৃত্ব দিতে গেলে ওদের (কংগ্রেসকে) মানুষের কাছে গিয়ে জোরের সঙ্গে বলতে হবে কে নেতা, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গীই বা কী। জনগণের কাছে এটা তুলে না ধরলে রাজনৈতিক লড়াই দেওয়া সম্ভব নয়।” |
|
|
|
|
|