সমকামী রায় পুনর্বিবেচনা করতে আর্জি জানাল কেন্দ্র

২০ ডিসেম্বর
মকামিতা রায় পুনবির্বেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাল কেন্দ্র। সমকামী সম্পর্ককে বৈধতা দিয়ে রায় দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সম্প্রতি সেই রায় খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জি এস সিঙ্ঘভি (এখন অবসরপ্রাপ্ত) ও বিচারপতি এস জে মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চের সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্যই আজ আর্জি জানিয়েছে কেন্দ্র।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে বিষয়টি নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয় দেশে। তাতে সমকামিতাকে বৈধতা দেওয়ার পক্ষেই দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস তথা ইউপিএ সরকার। কেন্দ্রের নির্দেশে আইনি কৌশল নিয়ে আলোচনা শুরু করেন অ্যাটর্নি-জেনারেল জি ই বাহনবতী ও অন্য কৌঁসুলিরা।
আজ সুপ্রিম কোর্টে আর্জি পেশ করেন বাহনবতী ও আইনজীবী দেবদত্ত কামাথ। সাধারণত পুনবির্বেচনার আর্জির শুনানি বিচারপতিদের চেম্বারে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আদালত কক্ষেই শুনানি চেয়েছেন বাহনবতী।
আর্জিতে কেন্দ্রের বক্তব্য, সমকামিতার বৈধতা খারিজ করে দেওয়া রায় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের বিরোধী। সংবিধানের ১৪, ১৫ ও ২১ নং অনুচ্ছেদে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের ব্যাখ্যা শীর্ষ আদালতই নানা মামলায় দিয়েছে। এই রায় সেই ব্যাখ্যার সঙ্গেও খাপ খাচ্ছে না।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার বলেই দেশে সমকামী সম্পর্ক অবৈধ। সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানায়, প্রয়োজনে সংসদ এই বিষয়ে আইন পরিবর্তন করুক।
আর্জিতে কেন্দ্রের বক্তব্য, ১৮৬০ সালে তৈরি এই আইন পাশ করেছিল ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকদের নিয়ে তৈরি আইনসভা। তাতে সায় দিয়েছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ গভর্নর-জেনারেল। সুতরাং এই আইনে ভারতীয় সংসদ বা এ দেশের জনমত প্রতিফলিত হয়েছে তা বলা যায় না।
কেবল সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে বলেই আইন পরিবর্তন করা যায় না বলেও রায়ে মন্তব্য করেছিল বিচারপতি সিঙ্ঘভি ও বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। আজ পেশ করা আর্জিতে তারও পাল্টা যুক্তি দিয়েছে কেন্দ্র। তাদের বক্তব্য, পরিস্থিতি বদলের সঙ্গে আইন পরিবর্তন স্বাভাবিক। কারণ, আইন শূন্যস্থানে কার্যকর করা হয় না। সমাজই আইন মেনে চলে।
কেন্দ্রের কৌঁসুলিদের যুক্তি, দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের পরে বহু সমকামী তাঁদের যৌন পরিচয় প্রকাশ করেছিলেন। এখন তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হতে পারে। এর প্রতিকার হওয়া উচিত।
এই মামলা চলাকালীন হলফনামায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, হেনস্থার ভয়ে সমকামীরা যৌন সংক্রমণের চিকিৎসা করাতেও ভয় পান। তাই তাঁদের মধ্যে এড্সের মতো রোগের প্রকোপ প্রবল। পুনবির্বেচনার আর্জিতে এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছে কেন্দ্র।
আর্জি পেশ করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল টুইটারে বলেন, “ব্যক্তিগত পছন্দের অধিকার স্বীকৃতি পাক, এটাই আমাদের আশা।”
কংগ্রেস এই বিতর্কে সমকামী সম্পর্ককে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও বিপরীত অবস্থান নেয় বিজেপি। আজ অবশ্য রাজ্যসভার বিরোধী নেতা অরুণ জেটলি বলেন, “এই বিষয়ে বিতর্ক এখনও শেষ হয়নি। কোর্ট ৩৭৭ নং ধারার বৈধতা বহাল রেখেছে। সেই ধারার অধীনে কী কী বিষয় আছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।” জেটলির দাবি, সরকার এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে বিজেপি তাদের অবস্থান জানাবে। লোকসভার বিরোধী নেতা সুষমা স্বরাজ আগেই সে কথা জানিয়েছেন।
বিতর্ক কোন পথে এগোবে, তা স্থির করার ভার আদালত ও সংসদের। দেশবাসীরও।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.