শর্ট স্ট্রিটের বিতর্কিত জমি-বাড়ি থেকে রিভলভার লুঠের ঘটনাকে চুরি হিসেবে দেখানো যে ঠিক হয়নি, শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে তা স্বীকার করে নিল রাজ্য সরকার। গত ১৫ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির কথাও এ দিন উচ্চ আদালতে দাঁড়িয়ে মেনে নিয়েছেন সরকারি আইনজীবী।
সরকারি আইনজীবী মনজিৎ সিংহ এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায়ের এজলাসে জানান, ৯এ শর্ট স্ট্রিটের বাড়িতে থাকা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মমতা অগ্রবাল ওই রিভলভার লুঠের ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই ঘটনার তদন্ত করে চুরির মামলা
দায়ের করেছিল শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। ১১ নভেম্বর ওই বাড়ি-জমি দখলের জন্য ফের হামলা চালানো হয়। গুলি চলে। তাতে দু’জনের মৃত্যু হয়।
সেই হামলার তদন্তে নেমে লালবাজারের গোয়েন্দারা আগ্নেয়াস্ত্র লুঠের বিষয়টি জানতে পারেন। তখনই এই পুলিশি গাফিলতির বিষয়টি সামনে আসে। সরকারি আইনজীবী জানান, ১৫ সেপ্টেম্বরের ঘটনাটিকে ডাকাতি হিসেবে দেখিয়ে মামলা শুরু করা উচিত ছিল। কিন্তু চুরির মামলা রুজু হওয়ায় ঘটনাটির গুরুত্ব অনেক কমে যায়। পরে গোয়েন্দারা শর্ট স্ট্রিট কাণ্ডের তদন্তকারী অফিসার নুর আলিকে ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেন।
শর্ট স্ট্রিট কাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত, জমি-বাড়ির কারবারি পরাগ মজমুদার তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে সম্প্রতি হাইকোর্টে আবেদন করেন, পুলিশ প্রথমে তাঁর বিরুদ্ধে যে-অভিযোগে মামলা করেছিল, পরে তা বদল করে নতুন অভিযোগ এনেছে। পরাগের দাবি, নতুন অভিযোগগুলি খারিজ করা হোক। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ওই মামলায় প্রথমে যিনি তদন্ত করছিলেন, তাঁকে সরিয়ে গুন্ডা দমন শাখার অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হল কেন? প্রথম তদন্তকারী অফিসার নুর আলিকেই বা কেন গ্রেফতার করা হল? সেই মামলাতেই সরকারি আইনজীবী এ দিন পুলিশি তদন্তে গাফিলতির কথা জানান। রিভলভার লুঠের বিষয়টিকে চুরি হিসেবে দেখিয়ে পুলিশ যে ভুল করেছে, তা-ও স্বীকার করেন তিনি।
হাইকোর্টে এই মামলার সঙ্গে সঙ্গে এ দিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টেও শর্ট স্ট্রিট মামলার শুনানি হয়। শর্ট স্ট্রিটে ডাকাতির মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত পিনাকেশ দত্ত এবং ঋত্বিক দে-কে আরও কিছু দিন পুলিশি হাজতে রাখা দরকার বলে জানান সরকারি আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাস। এর বিরোধিতা করেন অভিযুক্তদের আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত ও মহম্মদ ইয়াসিন রহমান। দু’পক্ষের সওয়ালের পরে পিনাকেশ ও ঋত্বিককে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। |
