সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানির জন্য একটি বিশেষ আদালত গঠন করতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্ট আরও বলেছিল, পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-কে শক্তিশালী করে তদন্তের সব দায়িত্ব তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এই নির্দেশকে সামনে রেখে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করলেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন।
মামলার আবেদনে সুদীপ্ত জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বিশেষ আদালত গড়া হয়নি। তদন্তের দায়িত্বও পুরোপুরি দেওয়া হয়নি সিট-কে। বরং তাঁকে নিয়ে পুলিশ যে-ভাবে টানাহেঁচড়া করছে, তিনি সেটা আর সহ্য করতে পারছেন না। আবেদনে তিনি বলেছেন, তাঁকে যে-ভাবে এক থানা থেকে অন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতে তাঁর ১৮ কিলোগ্রাম ওজন কমে গিয়েছে। সুদীপ্তের বক্তব্য, এই টানাহেঁচড়ায় যদি তাঁর মৃত্যু হয়, তা হলে সব থেকে বেশি ক্ষতি হবে আমানতকারীদের। এর আগে সিবিআই তদন্ত চেয়ে যখন সারদা মামলা চলছিল, তখনও সুদীপ্ত এই কথাগুলি বলেছিলেন আদালতে।
সুদীপ্তের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এ দিন জানান, বিধাননগর আদালতে যে-দিন অর্পিতা ঘোষের সাক্ষ্যগ্রহণ ছিল, তার আগের দিন অর্থাৎ গত ১৬ ডিসেম্বর পুলিশ সুদীপ্তকে কলকাতা থেকে বালুরঘাট নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকেও কয়েকটি জায়গায় তাঁকে ঘোরানো হয়। সেই রাতেই তাঁকে নিয়ে কলকাতার দিকে রওনা হন তদন্তকারী অফিসারেরা। অনির্বাণবাবুর দাবি, তাঁর মক্কেলকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করার এটিই একমাত্র উদাহরণ নয়। বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। অনির্বাণবাবুর অভিযোগ, “শুধু সুদীপ্ত নয়, অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তাঁকে এক বার গাড়িতে ৪৫০ কিলোমিটার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রাকৃতিক কারণেও তাঁকে গাড়ি থেকে নামতে দেওয়া হয়নি।” এ ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনেও অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সারদা মামলায় আর এক অভিযুক্ত, সাংসদ কুণাল ঘোষকে এ দিন ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয়। কুণালবাবুর আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পরে কুণালবাবুও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাতজোড় করে বলেন, “চাইলে আমি জবানবন্দি দেব। না-চাইলে দেব না। আমি আইনের কিছু বুঝি না। আমায় ফাঁসানো হয়েছে।” কুণালবাবুকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়। |