ছোট মোহনবাগানকেও পাঁচ গোল ইস্টবেঙ্গলের
ইস্টবেঙ্গল ৫ (মোগা ৩, ভাসুম, সুয়োকা)
ভবানীপুর ০
‘মোহনবাগান’ শব্দটা শুনলেই কি পাঁচ গোল দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামে ইস্টবেঙ্গল?
লাল-হলুদের প্রাক শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে উনিশশো পঁচাত্তরের সেই ডার্বিতে জেতা ঐতিহাসিক পাঁচ গোলের টিমকে সম্মানিত করবে ইস্টবেঙ্গল। যুবভারতীতে শনিবার বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার ও সোনাক্ষি সিংহের উপস্থিতিতে। সেই অনুষ্ঠানের ৪৮ ঘণ্টা আগে ‘ছোট মোহনবাগান’কেও পাঁচ গোলে হারালেন মোগা-সুয়োকারা।
ভবানীপুর ক্লাবের পরিচিতি ময়দানে ‘ছোট মোহনবাগান’ নামে। কারণ যাঁরা টিমটা চালান তাঁরা সবাই মোহনবাগানের শীর্ষ কর্তা। তার ওপর আবার সামনে হোসে ব্যারেটো। সেই ব্যারেটো, যিনি ভবানীপুরের জার্সি পরে এখন খেললেও, এখনও সবুজ-তোতাই রয়ে গিয়েছেন। বাগানের ঘরের ছেলে হিসাবেই যাঁর পরিচিতি।
সামনে ‘ছোট মোহনবাগান’ এবং ব্যারেটোনিট ফল পাঁচ গোল। জেমস মোগার হ্যাটট্রিক এবং সুয়োকা, লোবোদের দুর্দান্ত ফুটবল।
আই লিগের চ্যাম্পিয়নের লড়াই-তে ঢুকে পড়ার পর, কলকাতা লিগ জয়ের দিকেও আর্মান্দো কোলাসো ব্রিগেড। হোসে ব্যারেটোও যা থামাতে পারলেন না। শুধু তা-ই নয়, ম্যাচের শুরুতেই যদি বলজিৎ সিংহের হেড আর এক সিংহ— মনজিৎ গোল-লাইন সেভ না করতেন তবে হাফ ডজন গোলের আরও লজ্জা নিয়ে ফিরতে হত ভবানীপুরকে।
ব্যারেটোকে বাদ দিলে ভবানীপুরের এই টিমটা একেবারে নির্বিষ। বলা যায়, পাতে দেওয়ার মতো নয়। মাঝ-মাঠ থেকে রক্ষণ, কিপার প্রত্যেকে খুবই সাদামাঠা। কারও যেন লড়াইয়ের তাগিদই নেই। এ রকম একটা দলকে পেলে, বেঙ্গালুরু-জয় করে আসা যা করতে পারে তা-ই করল। বিরতির আগেই ম্যাচ ৩-০। পরের অর্ধে আরও দুই। ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত আর্মান্দো বলে দিলেন, “এই জয়টাই সমর্থকদের ক্রিসমাসের উপহার।”

হ্যাটট্রিক করে ক্যামেরার জঙ্গলে। বৃহস্পতিবার জেমস জোসেফ মোগা। ছবি: উৎপল সরকার।
কিন্তু এর থেকেও বড় প্রাপ্তি মনে হয় ‘বিতর্কিত’ মোগার দুরন্ত পারফরম্যান্স। ভবানীপুরের বিরুদ্ধে লাল-হলুদ ঝড় উঠেছিল শুরু থেকেই। মোগার জোড়া গোলের পাশাপাশি প্রায় দু’মাস পর মাঠে নেমে গোল পেলেন ভাসুম। ব্যারেটো ছাড়া সেই ঝড়ের সামনে দাঁড়াতে পারলেন না ভবানীপুরের কেউই। ব্যারেটোর কিছু ভাল পাস আর ড্রিবল চোখ টানল। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারটি বোঝালেন বয়স গতি কমালেও বাকি গুণগুলো অক্ষত রয়েছে। ব্যারেটোর দম ফুরিয়ে যাওয়ার পর ভবানীপুর আরও শেষ। হবে না-ই বা কেন? জানা গেল, বুধবারই অঙ্কুরহাটিতে একটি টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিল ভবানীপুর। ভাবা যায়!
দেশের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন বলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল মোগার। কিন্তু দক্ষিণ সুদানের স্ট্রাইকার দেখালেন তিনি পেশাদারজানেন কী ভাবে কখন সব সমালোচনার জবাব দিতে হয়। হ্যাটট্রিক করেও অবশ্য মন ভরেনি মোগার। ম্যাচের পর বলছিলেন, “আই লিগে হ্যাটট্রিকটা এখনও হয়নি। এই হ্যাটট্রিক করে খুশি হলেও তৃপ্ত নই।”
বুধবার চোটের জন্য অনুশীলনে না এসেও কী করে প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেন মোগা? দলীয় সূত্রের খবর, মোগা নাকি নিজে এসে এই ম্যাচ খেলতে চেয়েছেন। আর্মান্দোও প্রথম একাদশে মোগাকে রেখেছিলেন। মোগার হ্যাটট্রিকের পর গোয়ান কোচ বললেন, “আমি মোগার সঙ্গে কথা বলে বুঝেছিলাম ওর মধ্যে একটা জেদ তৈরি হয়েছে। সেটাই কাজে লাগিয়েছি।”
তবে ম্যাচের পর আরও বড় চমক অবশ্য ছিল! হেরে যাওয়ার পরও ব্যারেটোর নামে জয়ধ্বনি দিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা! যা দেখে ব্যারেটো বলে ফেললেন, “কলকাতায় আসার পর ইস্টবেঙ্গল মাঠে কোনও ম্যাচ খেললাম। ওদের সমর্থকরাও এ রকম উচ্ছ্বাস দেখাবেন, সম্মান জানাবেন, কল্পনা করতে পারিনি।”

ইস্টবেঙ্গল:
গুরপ্রীত (অভ্র), অভিষেক, গুরবিন্দর, অর্ণব, রবার্ট, ভাসুম (অ্যালভিটো), সুয়োকা, লোবো, খাবরা, বলজিৎ, মোগা (লেন)।

শুক্রবারে কলকাতা লিগ
মহমেডান: জর্জ টেলিগ্রাফ (বারাসত ৪-০০)।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.