গাছ কাটা হয়েছে ক্যামাক স্ট্রিটে। আর তার বদলে চারাগাছ পোঁতা হল পার্ক সার্কাসে!
সম্প্রতি ক্যামাক স্ট্রিট চওড়া করতে গিয়ে কাটা হয়েছে ন’টি গাছ। যে সব গাছ কাটা হয়নি, সেগুলিও অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা। এই নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ। তাঁদের আবেদনের পরে হাইকোর্ট ক্যামাক স্ট্রিট চওড়া করার কাজ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। মামলায় অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় জানান, ক্যামাক স্ট্রিট চওড়া করতে গিয়ে ন’টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ওই রাস্তার অন্য গাছগুলি তুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা পার্ক সার্কাসে দু’শোটি চারাগাছ বসিয়েছে। এ কথা শুনে বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “গাছ কাটা হয়েছে ক্যামাক স্ট্রিটে, তা হলে কী ভাবে তা পার্ক সার্কাসে বসানো হল?”
পরে ডিভিশন বেঞ্চ গোটা শহরে কোথায় কোথায় গাছ কাটা হয়েছে, কোথায় কত গাছ বসানো হচ্ছে এবং ক্যামাক স্ট্রিটের তুলে নেওয়া গাছ কোথায় বসানো হচ্ছে এ সব খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি তৈরি করে। কমিটির প্রধান হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রুমা পাল। কমিটির অন্য চার সদস্যও মহিলা হবেন। তবে তাঁদের নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আজ, শুক্রবার কমিটির সদস্যদের নাম জানানোর পাশাপাশি ক্যামাক স্ট্রিটের গাছ কাটার মামলার রায়ও দেবে ডিভিশন বেঞ্চ।
ক্যামাক স্ট্রিট চওড়া করার সময়ে গাছ কাটা নিয়ে কী আবেদন করেছিলেন পরিবেশপ্রেমীরা?
আদালতে আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, ওই রাস্তা চওড়া করার কোনও প্রয়োজন নেই। কাজ শুরুর আগে পুরসভা এ নিয়ে কোনও সমীক্ষাও করেনি। রাস্তা চওড়া করে ফুটপাত তুলে দিচ্ছে পুরসভা। এতে পথচারীদের বিপদ বাড়বে। আবেদনকারীরা অভিযোগ করেন, পুরসভার পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল, ক্যামাক স্ট্রিটের সমস্ত গাছ তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র বসানো হবে। কিন্তু এর মধ্যেই ন’টি গাছ এমন ভাবে কেটে ফেলা হয়েছে, যাতে ওই গাছগুলি কোথায় ছিল তা আর বোঝা যাচ্ছে না। আবেদনকারীদের অভিযোগ, শুধু ক্যামাক স্ট্রিট নয়, কলকাতা পুরসভা আইন না মেনে সর্বত্রই গাছ কাটছে।
|