বন্যার জেরে দু’বছরের মধ্যে কাজিরাঙার জঙ্গল থেকে উধাও হয়েছে বিপন্ন প্রজাতির শ’তিনেক বারাশিঙ্গা। বন দফতর ও ডব্লিউটিআইয়ের যৌথ উদ্যোগে ওই প্রজাতির হরিণের সাম্প্রতিক সুমারিতে এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছেন, বর্তমানে কাজিরাঙার জঙ্গলে আছে মাত্র ৮৩৬টি বারাশিঙ্গা।
২০০৭ সালের সুমারিতে বিপন্নতার তালিকায় একেবারে উপরের সারিতে থাকা ‘ইস্টার্ন সোয়াম্প ডিয়ার’ (বারাশিঙ্গা নামেও পরিচিত) ‘আশ্রয়’ কাজিরাঙায় মাত্র ৬৮১টি হরিণের খোঁজ মিলেছিল। এরপরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজে নামে ‘ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’ (ডব্লিউটিআই), কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষ এবং ‘অয়েল অ্যান্ড ন্যাচরাল গ্যাস কর্পোরেশন’ (ওএনজিসি)। বারাশিঙ্গাদের গলায় ‘রেডিও কলার’ লাগিয়ে দেওয়া হয়। ২০১১ সালের হরিণ সুমারিতে তাদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১৬৮টি। |
ডব্লিউটিআইয়ের তরফে রথীন বর্মণ বলেন, “গত বছর বন্যার আগে সুমারিতে হাজার খানেক বারাশিঙ্গার দেখা মিলেছিল। কিন্তু, বন্যার পরে এক ধাক্কায় ২০০টি হরিণ কমে যায়। প্রায় ৬০০টি হগ ডিয়ারও মারা গিয়েছিল।” তিনি জানান, গত বছর বন্যার পর ৮৪১টি বারাশিঙ্গার সন্ধান মেলে। বর্তমানে তার সংখ্যা আরও ৫টি কমেছে। ১৯৯১ সালে কাজিরাঙায় প্রথম বারাশিঙ্গা সুমারিতে ৫৫৯টি হরিণ মিলেছিল।
কাজিরাঙার বন্যা-সঙ্কুল অরণ্যে ইস্টার্ন সোয়াম্প ডিয়ারের দেখা মেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচ্ছিন্ন প্রজাতি হিসেবে নিজেদের মধ্যে বংশবৃদ্ধি ওই হরিণ প্রজাতিকে বিপন্নতর করে তুলছে। স্থানীয় ভাষায় দল (কাদা) হরিণ নামে পরিচিত এই প্রজাতি ‘সোয়াম্প ডিয়ার’-এর তিনটি প্রজাতির অন্যতম। ভারত ও নেপালের অন্য দু’টি প্রজাতি হলগাঙ্গেয় উপত্যকার ‘ওয়েটল্যান্ড সোয়াম্প ডিয়ার’ ও মধ্য ভারতের ‘হার্ডগ্রাউন্ড সোয়াম্প ডিয়ার’।
|